Logo

মজার খেলা টেনিস

অনিন্দ্য বাংলা
শুক্রবার, এপ্রিল ৩, ২০২০
  • শেয়ার করুন

মজার খেলা টেনিস
রুশী চৌধুরী
শারীরিকভাবে সুস্থ থাকা এবং শক্তি অর্জন করার ক্ষেত্রে অন্যতম সহায়ক খেলা হলো টেনিস। অনেক দেশে একে লন টেনিসও বলা হয়ে থাকে। খুব অল্প জায়গাতে দু’জন মিলে খেলা যায় এই মজার খেলা। যার জন্য চাই তারযুক্ত একটি দণ্ড, যা র্যাকেট নামে পরিচিত, একটি  বল এবং জাল।
প্রথমত, টেনিস খেলার জন্য নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। অনেক মনোযোগ এবং ধৈর্য্য শক্তি বাড়াতে সহায়ক হবে এটি। কারণ টেনিস বল ধরা, স্ট্রোক দেওয়া এগুলো বোঝা একটু সময় সাপেক্ষ।
খেলোয়াড় সংখ্যা দু’জন হলে মাঠের দৈর্ঘ্য ৭৮ ফুট ও প্রস্থ ২৭ ফুট, আর চারজন হলে দৈর্ঘ্য ৭৮ ফুট ও প্রস্থ ৩৬ ফুট হয়ে থাকে। প্রাচীন গ্রিস, ইতালি, মিশর, পারস্য এবং আরব দেশে একটি ঘরের মাঝ বরাবর দড়ি টানিয়ে এক ধরনের হ্যান্ডবল খেলা থেকে টেনিসের উত্পত্তি। ১৬শ’ শতকে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপিয় দেশে খেলাটির অনুষঙ্গ ও সরঞ্জামে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে। ১৮৭৩ সালে আধুনিক লন টেনিসের উদ্ভাবন করেন ইংল্যান্ডের মেজর ওয়াল্টার উইংফিল্ড। তখন এটি ছিল ১৫ পয়েন্টের খেলা এবং কেবল সার্ভারই স্কোর করতে পারতো। ১৮৮১ সালে খেলাটির নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন প্রবর্তনের জন্য ইউনাইটেড স্টেটস টেনিস অ্যাসোসিয়েশন (ইউএসটিএ) গঠিত হয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সবচেয়ে মর্যাদাবান ও ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট সমূহের মধ্যে রয়েছে উইম্বলডন, ইউএস ওপেন, ফ্রেঞ্চ ও অস্ট্রেলিয়ান একক চ্যাম্পিয়নশীপ প্রভৃতি। বর্তমান বিশ্বে অন্যতম আকর্ষণীয় টুর্নামেন্ট হলো ১৯০০ সালে ্রপ্রবর্তিত ডেভিস কাপ।
সার্ভিসের বল খেলোয়াড়ের বিপরীত দিকের সার্ভিস কোর্টে জাল না ছুঁয়ে পাঠাতে হয়। যদি সার্ভিসে কোনো ধরনের ভুল হয় তবে ‘সার্ভার’ দ্বিতীয় সুযোগ পায় সার্ভ করার। দ্বিতীয় সার্ভিস ভুল হলে ‘ডবল ফল্ট’ বলে এবং রিসিভার পয়েন্ট পায়। সঠিক সার্ভিস হলে খেলার মূল অংশ (র্যালি) শুরু হয়, যেখানে প্রতিটি খেলোয়াড় বল মেরে ফেরত পাঠায় বিপক্ষ দলের কোর্টে। এভাবে বল দেওয়া-নেওয়া করে তারা প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করার চেষ্টা করে, যাতে প্রতিপক্ষ বলটি সঠিকভাবে তাকে ফেরত পাঠাতে না পারে। যদি প্রতিপক্ষ সঠিকভাবে বল পাঠাতে ব্যর্থ হয় তবে খেলোয়াড় পয়েন্ট পায়। সঠিকভাবে বল পাঠাতে হলে খেলোয়াড়কে একবার আঘাত করে বল প্রতিপক্ষের কোর্টে নিয়ে ফেলতে হবে এবং সেটা করতে হয় প্রতিপক্ষের পাঠানো বল দু’বার মাটিতে পড়ার আগে।
পয়েন্ট হলো টেনিস স্কোরিংয়ের ক্ষুদ্রতম ইউনিট। যিনি সার্ভ করছেন তিনি পরপর দু’বার ভুল সার্ভ করলে প্রতিপক্ষ সরাসরি একটি পয়েন্ট পেয়ে যাবেন। তা না হয়ে বৈধ সার্ভ হলে যে পক্ষ বৈধভাবে বল ফেরাতে ব্যর্থ হবে, প্রতিপক্ষ পাবে পয়েন্ট। পয়েন্ট হিসেবটা একটু অন্যভাবে করা হয়। এখানে ১, ২, ৩ পয়েন্ট হিসেব না করে যথাক্রমে ১৫, ৩০ ও ৪০ এভাবে প্রথম ৩ পয়েন্ট গণনা করা হয়। চতুর্থ পয়েন্টে গিয়ে হয় গেম। এক পয়েন্ট এগিয়ে থাকাকে বলে অ্যাডভান্স, পয়েন্ট সমান হলে ডিউস। একটি গেম জিততে গেলে প্রতিপক্ষের চেয়ে কমপক্ষে ২ পয়েন্টে এগিয়ে থাকতে হয়। নতুবা খেলা চলতেই থাকে।
এভাবে ছয়টি গেম দিয়ে হয় একটি সেট। এভাবে তিন বা পাঁচটি সেটে খেলার নিষ্পত্তি হয়। সাধারণত মেয়েদের বেলায় তিন সেটে এবং ছেলেদের বেলায় পাঁচ সেটের খেলা হয়। সেট ব্যবধান ২ থাকলে  এক জনের জয় হয়। তবে গেম জেতার জন্য কোনো খেলোয়াড়কে পরপর ২ পয়েন্ট পেতে হয়। এভাবে কোনো খেলোয়াড় যদি প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের সাথে কমপক্ষে দুই গেম ব্যবধান রেখে ছয়টি গেম জয় করতে পারে তবে সে একটি সেট জিতে নিতে সক্ষম হয়। এভাবে সর্বোচ্চ সেট জয়ী খেলোয়াড় বিজয়ী হয়।
কোনো সেটে ৬-৬ গেমে সমতা চলে এলে তখন খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে দুই খেলোয়াড় মোট ১২ পয়েন্টের জন্য খেলেন। প্রতি সার্ভিসে এক পয়েন্ট। যিনি আগে ৭ পয়েন্ট জিততে পারবেন সেট তার। তবে শেষ সেটে খেলা গড়ালে তখন আর টাইব্রেকার পয়েন্টের ব্যবধানে হয় না। তখন আবার দুই গেমের ব্যবধান রেখে জয় নিশ্চিত করতে হবে।