Logo

ঈদুল আযহা আসলে পথে ঘাটে শোনা যায় বাঙ্গালীর ঐতিহ্যর ডাক “শিল পাটা ধার করাইবেন গো… শিল পাটা”

অনিন্দ্য বাংলা
বুধবার, জুলাই ২৯, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: গ্রামে কিংবা শহরে ঈদ, বিয়ে, বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে শিল পাটা একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ। মসলা পিষা ছাড়াও ঈদের সময় মেহেদী, বিয়েতে কাঁচা হলুদ ইত্যাদি পিষে নিতে শিল পাটা চাই-ই চাই। এ সমস্ত অনুষ্ঠানের আগেই বাড়ির নারীরা এগুলো ধার করিয়ে রাখতেন।
দীর্ঘদিন মসলাসহ ইত্যাদি উপকরণ বাটার জন্য ব্যবহৃত শিল পাটা ক্ষয় হয়ে যায়। ফলে এগুলোকে আবার ধার করাতে হয়। আর এই শিল পাটা ধার করানোর জন্য কিছু নির্দিষ্ট লোক আছে। তারা শিল পাটা ধার করাইবেন গো… শিল পাটা, এই বলে বলে মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে বেড়ায়। কাঁধে থাকে একটি টিনের বাক্স বা চটের ব্যাগ। এই ব্যাগের ভিতর থাকে চশমা, হাতুড়ি, লোহার তৈরি এক ধরণের বিশেষ লম্বা যন্ত্র। যা পাটার উপর রেখে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করার ফলে পাথরের উপর ছোট ছোট ছিদ্র হয়। এভাবেই ধার করা হয়ে গেলে পুনরায় মসলা বাটার উপযুক্ত হয়। আর চশমা না পড়ে পাটা কাটলে পাথরের গুঁড়া চোখ যেতে পারে। তখন চোখের ক্ষতি হয়।
বর্তমানে আধুনিক ব্লেন্ডার মেশিন ও প্যাকেটজাত গুঁড়া মসলার প্রভাবে এই শিল পাটার ব্যবহার অনেটাই কমে গেছে। হারিয়ে যাচ্ছে এই পেশাধারীদের পেশা। আধুনিক পৃথিবীতে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর অভ্যাস। যে অভ্যাসের বেশিভাগ দিকই ছিল ইতিবাচক। মানুষ একটা নিয়মের মধ্যে, আচারের মধ্যে চলতো। এখন আর সেটি তেমনভাবে চোখে পড়েনা। নির্দিষ্ট কিছু প্যাকেট আর ব্যান্ডের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে সব। রাঁধুনি বলতেই চোখের সামনে ভেসে উঠতো ঘোমটা পড়া বৌ। এখন রাধুঁনি থাকে প্যাকেটের গায়ে। কত সহজ হয়েছে কাজ। এই সহজের ভিড়ে আমরাই না কবে বিলীন হয়ে যাই।