Logo

এক নজরে মমতা ব্যানার্জী !

অনিন্দ্য বাংলা
শনিবার, মে ৮, ২০২১
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক :  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলাদা করে পরিচয় দেওয়া মানে অত্যুক্তি। রাজনীতিতে কুত্‍‌সা, অপপ্রচারকে হাতিয়ার করেন অনেকেই। নানা প্রতিবাদ, প্রতিরোধ থাকেই। লড়াইটাই শেষ কথা। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের ফল দেখে বলা যায়, এক এবং অনেক জন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা। বিরুদ্ধে সব বিরোধী শক্তির মিলন। এবং
যাবতীয় আক্রমণ, ঝড় সামলে বিপুল জনাদেশ। শেষ হাসি মমতার। যাক, অনেক কুত্‍‍‌সা তো হল। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে কিছু না-জানা তথ্য জেনে নেওয়া যাক। তৃণমূল নেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের সেই তথ্যগুলি রইল পাঠকদের জন্য।১. বিরোধীরা অনেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকে বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিগ্রি নাকি ভুয়ো। আসল সত্যিটা হল, তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোর একটি MA ডিগ্রি রয়েছে। এছাড়াও তিনি LLB-ও।

২. নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করা আমলা– সকলেই ক্লান্ত। হাঁপাচ্ছেন। একজনের কোনও ক্লান্তি নেই। মাইলের পর মাইল হেঁটে চলেছেন। হাসি মুখে। রাস্তার দু’পাশে বিপুল সমর্থকদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন। বয়স্ক মহিলাকে জড়িয়ে ধরছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন দৃশ্যের সঙ্গে পরিচিত রাজ্য-সহ জাতকীয় রাজনীতি। এই অফুরন্ত জীবনীশক্তির চাবিকাঠি কিন্তু কড়া ডায়েট। হ্যাঁ, ডায়েট সম্পর্কে মমতা যথেষ্ট সচেতন। তেল ও মশলা জাতীয় খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলেন। মুড়ি, চা ও চকোলেট– রোজকার ডায়েটে মাস্ট। আর প্রচুর পরিমাণে জল। তবে তেলেভাজা ছোটবেলা থেকেই তাঁর খুব প্রিয়। তাই মাঝেমধ্যে আলুর চপ এড়াতে পারেন না।

৩. স্বাস্থ্য সম্পর্কেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদা সচেতন। এমনিতেই তিনি প্রচুর হাঁটেন। তা ছাড়াও বাড়িতে প্রতিদিন নিয়ম করে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার ট্রেডমিলে হাঁটেন। বিধানসভা ভোটের আগে তো একদিনে টানা ১০ কিলোমিটারও হেঁটে ফেলেছেন অনায়াসে।

৪. জাতীয় রাজনীতিতে দিদির পোশাকও চর্চার বিষয়। মমতা ছাড়া ভারতের কোনও রাজনীতিবিদের পোশাক ওরকম নয়। সরু পাড়ের সুতির শাড়ি ও পায়ে সাদা হাওয়াই চটি। মমতা বন্দ্যোয়ারে শাড়ি ধনেখালির তাঁত। ওই শাড়ি ছাড়া তিনি অন্য কোনও শাড়ি কোনও দিনও পরেন না।

৫. অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপনেই অভ্যস্ত তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। তাই একাধিক বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও কালীঘাটের টালির চালের একতলা বাড়িটি ছেড়ে চলে যাননি। বৃষ্টি হলে টালি নালার ধারে মমতার বাড়িতে এখনও জল ঢুকে যায়। বর্যাকালে প্রবল বৃষ্টিতে এক হাঁটু জল টপকে বাড়ি ঢুকতে হয়। যা দেখে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী অবাক গিয়েছিলেন। মমতার সাধারণ জীবনযাপনের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন বাজপেয়ী।

৬. প্রকৃতিকে বড় ভালোবাসেন মমতা। তাই বার বার চলে যান হিমালয়ে কিংবা জঙ্গলমহলে। ব্যস্ততা থেকেও সময় বার করে পাহাড়ে বা জঙ্গলে কাটিয়ে আসেন দিন কয়েক। নিজের ট্যাবে প্রকৃতির ছবিও তোলেন দেদার।

৭. প্রকৃতি ভালোবাসেন বলেই শহরকে সাজানোর নানাবিধ পরিকল্পনা নিয়ে নেন মুহূর্তে। একবার রাজারহাট বাইপাস হয়ে ফিরছিলেন মমতা। চোখে পড়ে রাজারহাটে একদিকে বিস্তীর্ণ জলাশয়। সঙ্গে সঙ্গে পুর ও নরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে নির্দেশ দেন, এই জলাশয়কে কেন্দ্র করে পার্ক তৈরি হোক। যার নির্যাস, সেন্ট্রাল পার্ক, ক্যাফে একান্তে ও একটি ট্যুরিস্ট রিসর্ট।

৮. গানও খুব প্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সব ধরনের মিউজিক শোনেন তিনি। তাই ক্ষমতায় এসেই কলকাতার ট্র্যাফিক সিগনালগুলিতে চালু করে রবীন্দ্র সঙ্গীত বাজানো। কাজি নজরুল ইসলামের কবিতা ও গানও ভালোবাসেন মমতা। গানের প্রতি তাঁর ভালোবাসা পেয়েছেন মায়ের কাছ থেকে। ছোটবেলায় মায়ের কাছে নানা বাংলা গান শুনতেন তিনি।

৯. ছেলেবেলার কথা মনে পড়লেই মমতার মনে পড়ে বীরভূমে মামাবাড়ির দিনগুলো। ধানখেতের আল ধরে হেঁটে যাওয়া, ধানের শিষ দিয়ে পুতুল গড়া সেই স্মৃতি তৃণমূল নেত্রীর কাছে বড় মধুর।

১০. রাজনীতিতে আসার আগে একাধিক চাকরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকেই জানেন না, স্টেনোগ্রাফার হিসেবে কিছুকাল কাজ করেছেন। অভাবের সংসার চালাতে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রাইভেট টিউটর, এমনকি সরকারি দুগ্ধ কেন্দ্রে সেলসগার্লের কাজও করেছেন তিনি।

১১. রাজ্যের বহু প্রবীণ নেতা, যাঁরা একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাইড ছিলেন, তাঁরা এখন অনেকেই মমতার মন্ত্রিসভার সদস্য। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হল, সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বলা হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক জীবনে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় এখন মমতা সরকারের মন্ত্রী।

১২. রাজনীতি ছাড়া সাহিত্যচর্চাও করেন মমতা। অবসর সময়ে বই লেখেন। উপন্যাস, গল্প, কবিতা। এছাড়া তিনি ভালো আঁকেনও।

১৩. চটজলদি কবিতা লেখার প্রতিভা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দলের স্লোগান, কথা সব তত্‍‌ক্ষণাত্‍‌ বলেন। আগে থেকে ঠিক করে রাখেন না।

১৪. গ্রাম বাংলার শিল্প ও সাহিত্য মমতার খুবই প্রিয়। কাউকে উপহার দিলে, গ্রাম বাংলার হস্তশিল্পই উপহার দেন। প্রত্যন্ত গ্রামের কোনও হস্তশিল্প পছন্দ হলে চটজলদি কিনে ফেলেন।নিজে যে ব্যাগটা ব্যবহার করেন, সেটাও বাংলার হস্তশিল্প।

১৫. প্রযুক্তিতেও পিছিয়ে নেই তিনি। অত্যাধুনিক গ্যাজেট সম্পর্কে খোঁজ নেন নিয়মিত। ফেসবুক, টুইটার-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন। ফেসবুক পেজে সব সময় আপডেট দেন।

এবার বিস্তারিত :

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৫৫ সালের ৫ জানুয়ারি কলকাতার হাজরা অঞ্চলে এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা প্রমীলেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কলকাতার শ্রীশিক্ষায়তন কলেজ থেকে বি.এ. ডিগ্রি সম্পূর্ণ করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজ থেকে এলএল.বি. ডিগ্রি অর্জন করেন। রাজনীতিতে প্রবেশ ছাত্রাবস্থাতেই। শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করার পর সংসার চালনার জন্য কিছুকাল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিবাহ করেননি।

১৯৭০-এর দশকে অত্যন্ত অল্প বয়সে কংগ্রেস (আই) দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কর্মজীবনের সূচনা হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি স্থানীয় কংগ্রেস নেত্রী রূপে পরিচিত হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ মহিলা কংগ্রেস (আই)-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।[১৫] ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে পরাজিত করে সাংসদ নির্বাচিত হন। সেই সময় তিনি ছিলেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ সাংসদের অন্যতম। এই সময় তিনি সারা ভারত যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকও মনোনীত হয়েছিলেন। ১৯৮৯ সালের কংগ্রেস-বিরোধী হাওয়ায় তিনি তার কেন্দ্র থেকে পরাজিত হন। কিন্তু ১৯৯১ সালের লোকসভা নির্বাচনে কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্র থেকে পুনরায় সাংসদ নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯৬১৯৯৮১৯৯৯২০০৪ ও ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও উক্ত কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

১৯৯১ সালে নরসিমা রাও মন্ত্রিসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানব সম্পদ উন্নয়নক্রীড়া ও যুবকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিকাশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী মনোনীত হন। পরে ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে খেলাধূলার প্রতি সরকারি ঔদাসিন্যের প্রতিবাদে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।[১৬] ১৯৯৩ সালে তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়। ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে তিনি তার দলের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে সিপিআই(এম)-কে সহায়তা করার অভিযোগ আনেন। নিজেকে দলের একমাত্র প্রতিবাদী কণ্ঠ বলে উল্লেখ করে তিনি এক “পরিচ্ছন্ন কংগ্রেস”-এর দাবি জানান। কলকাতার আলিপুরে একটি জনসভায় গলায় শাল পেঁচিয়ে আত্মহত্যারও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি।[১৭] ১৯৯৬ সালের জুলাই মাসে পেট্রোলিয়ামের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে লোকসভার ওয়েলে বসে পড়েন তিনি। এই সময়ই সমাজবাদী পার্টি সাংসদ অমর সিংহের জামার কলার ধরে তার সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন মমতা। ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে লোকসভায় রেল বাজেট পেশের দিন পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার প্রতিবাদে রেল বাজেট পেশ চলাকালীনই তদনীন্তন রেলমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের দিকে নিজের শাল নিক্ষেপ করেন তিনি। পরে তিনি সাংসদ পদ থেকে ইস্তফাও দেন। কিন্তু লোকসভার তদনীন্তন অধ্যক্ষ পি. এ. সাংমা তার পদত্যাগপত্র প্রত্যাখ্যান করে তাকে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেন। পরে সন্তোষমোহন দেবের মধ্যস্থতায় তিনি ফিরে আসেন।

১৯৯৭ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস স্থাপন করেন। অনতিকাল পরেই তার দল দীর্ঘকাল বামফ্রন্ট-শাসিত পশ্চিমবঙ্গের প্রধান বিরোধীশক্তিতে পরিণত হয়। ১৯৯৮ সালের ১১ ডিসেম্বর সমাজবাদী পার্টি সাংসদ দারোগা প্রসাদ সরোজ “মহিলা সংরক্ষণ বিলের” বিরোধিতায় লোকসভার ওয়ালে নেমে গেলে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার জামার কলার ধরে টানতে টানতে তাকে ওয়েলের বাইরে বের করে দেন।[১৮] এই ঘটনায় কিছু বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়।

১৯৯৯ সালে মমতা বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে সামিল হন। এই জোট সরকার গঠন করলে তিনি রেলমন্ত্রী মনোনীত হন।

২০০০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার প্রথম রেল বাজেট পেশ করেন। এই বাজেটে তিনি তার নিজের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের প্রতি অনেক প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছিলেন।[১৯] দ্বি-সাপ্তাহিক নতুন দিল্লিশিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেস চালুর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসাধনের লক্ষ্যে তিনি চারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুরপাল্লার ট্রেন চালু করেন। এগুলি হল হাওড়াপুরুলিয়া এক্সপ্রেস, শিয়ালদহনিউ জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস, শালিমারবাঁকুড়া এক্সপ্রেস ও শিয়ালদহ-অমৃতসর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস (সাপ্তাহিক)।[১৯] এছাড়া তিনি পুনেহাওড়া আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেসের দিনসংখ্যা বৃদ্ধি করেন এবং তিনটি এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিষেবার প্রসার ঘটান। তার ক্ষুদ্র মন্ত্রিত্বকালে হাওড়া-দিঘা রেল প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল।[২০]

এই সময় তিনি পর্যটন উন্নয়নের দিকেও মনোনিবেশ করেছিলেন। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়েতে তিনি দুটি নতুন ইঞ্জিন চালু করেন এবং ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন লিমিটেড প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। এছাড়া ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নির্মাণের ব্যাপারে ভারতের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাংলাদেশ ও নেপাল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া লাইনগুলি আবার চালু করার কথাও বলেন। ২০০০-২০০১ আর্থিক বছরে তিনি মোট ১৯টি নতুন ট্রেন চালু করেছিলেন।[২০]

২০০১ সালের প্রথম দিকে একটি রাজনৈতিক মতবিরোধের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনডিএ-র সঙ্গে সম্পর্ক সাময়িকভাবে ত্যাগ করেন। ২০০১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তার দল জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়। তবে সেবার এই জোট বামফ্রন্টকে পরাজিত করতে অসমর্থ হয়েছিল। ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি আবার এনডিএ-তে ফিরে আসেন এবং কয়লা ও খনি মন্ত্রকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তার পশ্চিমবঙ্গ থেকে নির্বাচিত একমাত্র তৃণমূল সাংসদ।

২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকারের শিল্পনীতির বিরোধিতা করেন মমতা। ইন্দোনেশিয়া-ভিত্তিক সালিম গোষ্ঠীর মালিক বেনি সান্তোসো পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ করতে এলে সরকার তাকে হাওড়ার একটি কৃষিজমি কারখানা স্থাপনের উদ্দেশ্যে প্রদান করে। এর পরই রাজ্যে বিক্ষোভ পুঞ্জীভূত হয়। প্রবল বর্ষণের মধ্যেই সান্তোসোর আগমনের প্রতিবাদ জানাতে মমতা ও তার সমর্থকেরা তাজ হোটেলের সামনে জড়ো হন। পুলিশ তাদের হটিয়ে দিলে তারা পরে সান্তোসোর কনভয় ধাওয়াও করেন। উল্লেখ্য, কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি এড়াবার জন্য সরকার সান্তোসোদের কর্মসূচি তিন ঘণ্টা এগিয়ে এনেছিল।[২১][২২]

২০০৫ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়েন। এই বছর পৌরনির্বাচনে তার দল কলকাতা পৌরসংস্থার ক্ষমতা হারায়। কলকাতার তদনীন্তন মহানাগরিক সুব্রত মুখোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। ২০০৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনেও তৃণমূল কংগ্রেস বড়োসড়ো বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। এই নির্বাচনে পূর্বের বিজিত আসনগুলির অর্ধেকেই দল পরাজিত হয়েছিল।

২০০৬ সালের ৪ আগস্ট লোকসভার তৎকালীন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় তার আনা একটি মুলতুবি প্রস্তাব বাতিল করে দেওয়ার পর মমতা লোকসভার উপাধ্যক্ষ চরণজিৎ সিংহ অটওয়ালের কাছে তার ইস্তফাপত্র পাঠান। পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে এই মুলতুবি প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু মুলতুবি প্রস্তাব উত্থাপনের সঠিক নিয়মাবলি না মানায় অধ্যক্ষ এটি বাতিল করে দিয়েছিলেন।[২৩][২৪]

২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো প্রকল্পের বিরুদ্ধে একটি জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে তাকে জোর করে বাধা দেওয়া হয়। মমতা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিধানসভাতেই সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তিনি ১২ ঘণ্টা বাংলা বনধও ঘোষণা করেন।[২৫] তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়করা বিধানসভায় ভাঙচুর চালান[২৬], পথ অবরোধ করেন এবং অনেক জায়গায় যানবাহনে অগ্নিসংযোগও করা হয়।[২৫] এরপর ২০০৬ সালের ১৪ ডিসেম্বর একটি বড়োসড়ো ধর্মঘট পালিত হয়েছিল।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে একটি কেমিক্যাল হাব স্থাপন করতে চাইলে তমলুকের সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের নেতৃত্বাধীন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ এই অঞ্চলে জমি অধিগ্রহণের নোটিশ জারি করেন।[২৭][২৮] তৃণমূল কংগ্রেস এর বিরোধিতা করে। মুখ্যমন্ত্রী নোটিশটি বাতিল ঘোষণা করেন।[২৯] ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ কৃষকদের ছয়মাসব্যাপী অবরোধ তুলতে পুলিশ তাদের উপর গুলিচালনা করলে চোদ্দো জনের মৃত্যু ঘটে। তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষকদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করে।[৩০] এরপর রাজনৈতিক সংঘর্ষে বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।[৩১] নন্দীগ্রাম গণহত্যার প্রতিবাদে কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের একটি বৃহৎ অংশ বামফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন।[৩২][৩৩][৩৪] প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও তদনীন্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিবরাজ পাতিলকে লেখা চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিআই(এম)-এর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টির অভিযোগ আনেন।[৩৫][৩৬] আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নন্দীগ্রামের কেমিক্যাল হাব প্রকল্পটি স্থগিত করতে বাধ্য হন। কিন্তু কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে মমতা প্রভূত জনপ্রিয়তা অর্জনে সক্ষম হন। উর্বর কৃষিজমিতে শিল্পের বিরোধিতা ও পরিবেশ রক্ষার যে বার্তা নন্দীগ্রামের আন্দোলন প্রদান করে তা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র দেশে।

২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস অত্যন্ত ভাল ফল করে। পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস একাই ১৯টি আসনে জয়লাভ করে। তৃণমূলের জোটসঙ্গী জাতীয় কংগ্রেস ৬টি আসনে ও এসইউসিআই(সি) একটি আসনে জয়লাভ করে। তৃণমূল কংগ্রেস জোট মোট ২৬টি আসনে জয়লাভ করে।[৩৭] অন্যদিকে বামফ্রন্ট ১৫টি ও বিজেপি একটি আসন পায়। তৃণমূল কংগ্রেসের ১৯ জন সাংসদের মধ্যে মহিলা সাংসদের সংখ্যা পাঁচ। উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেস ভারতে মহিলা সংরক্ষণ বিলের প্রবল সমর্থক। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীরা রাজ্যের ৩৩ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের ইতিহাসে প্রথম শাসকদলকে লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত করে। এর আগে ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ডের পর রাজ্যের বিরোধী দল সবচেয়ে ভাল ফল করেছিল। কিন্তু সেবারও তাদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যা ছিল মাত্র ১৪।

২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয়বার রেলমন্ত্রী হন। এই বছরের রেল বাজেটে তিনি রেল মন্ত্রকের বিভিন্ন নতুন উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন। দেশের ৫০টি স্টেশনকে তিনি আন্তর্জাতিক সুযোগসুবিধা সম্পন্ন বিশ্বমানের স্টেশনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেন। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে এই উন্নয়নের কাজ করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। এছাড়াও ৩৭৫টি স্টেশনকে তিনি আদর্শ স্টেশন ঘোষণা করেন। গুরুত্বপূর্ণ যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য বাজার, ফুড স্টল ও রেস্তোরাঁ, বইয়ের স্টল, পিসিও/এসটিডি/আইএসডি/ফ্যাক্স বুথ, ওষুধের দোকান ও স্টেশনারি দোকান, স্বল্পব্যয়ের হোটেল এবং ভূগর্ভস্থ পার্কিং ব্যবস্থা সহ মাল্টি-ফাংশনাল কমপ্লেক্স স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই কমপ্লেক্সগুলিও পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে গঠিত হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। রেলের গ্রুপ ডি কর্মচারীদের কন্যাসন্তানদের আত্মস্বনির্ভরতা বৃদ্ধি করতে তাদের উচ্চশিক্ষায় স্কলারশিপ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলের জমিতে সাতটি নার্সিং কলেজ প্রতিষ্ঠারও প্রস্তাব দেন।[৩৮] এছাড়া যুব এক্সপ্রেস ও দুরন্ত এক্সপ্রেস নামে দুই প্রকার নতুন ট্রেনও চালু করেন তিনি। দুরন্ত বর্তমানে ভারতের দ্রুততম রেল পরিষেবা।[৩৯]

মহিলা নিত্যযাত্রীদের সুবিধার্থে ২০০৯ সালের ১৯ জুলাই মমতা হাওড়াব্যান্ডেল শাখায় একটি লেডিজ স্পেশাল ট্রেন চালু করেন।[৪০] পরে শিয়ালদহকল্যাণীপানভেলমুম্বই সিএসটি ইত্যাদি সারা দেশের একাধিক শাখায় মহিলা স্পেশাল ট্রেন চালু হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর শিয়ালদহ ও নতুন দিল্লির মধ্যে প্রথম দুরন্ত এক্সপ্রেস চালু হয়।[৪১] ২১ সেপ্টেম্বর চেন্নাই ও নতুন দিল্লির মধ্যে দ্বিতীয় দুরন্ত এক্সপ্রেসটি চালু হয়। মমতা সন্ত্রাসবিধ্বস্ত কাশ্মীরেও রেলপথের প্রসারে মনোযোগী হন। অক্টোবর মাসে অনন্তনাগ-কাদিগন্দ রেলওয়ে চালু হয়।[৪২] ২০১০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি মমতা নতুন উনিশটি রেল পরিষেবা চালু করেন।[৪৩]

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের পতন ঘটিয়ে ২২৭টি আসনে (এককভাবে ১৮৪টি আসনে) জয়লাভ করে (মোট ২৯৪টি আসনের মধ্যে) সরকার গঠন করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরূপে শপথ গ্রহণ করেন।

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১২ তে, বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ সহ অন্যান্য ইস্যুতে সংঘাত ঘটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট বা ইউপিএ-এর থেকে সমর্থন তুলে নেন।[৪৪][৪৫]

২০১৪ সালে ভারতের লোকসভার নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে লড়ে পশ্চিমবঙ্গের ৩৪টি লোকসভা আসনে জয়লাভ করে।

২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস এককভাবে ২১১টি আসনে জয়লাভ করে (মোট ২৯৪টি আসনের মধ্যে) সরকার গঠন করে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরূপে পুনরায় শপথ পাঠ করেন। [৪৬]

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনীর উপর ভিত্তি করে বাঘিনী নামের একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে, যেটি ২০১৯ সালের মে মাসের ৩ তারিখে মুক্তি পেয়েছে।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কিংবদন্তি রাজনীতিক মমতা ব্যনার্জী :

1. মমতার জন্ম=5ই.জানুয়ারি.1955.
2. মমতার জন্মস্থান= বীরভূমের তারাপীঠে ।
3. মমতার বাসস্থান=পটুয়াপাড়া. কালিঘাট(দক্ষিন কোলকাতা)
4. কোন পরিবারে মমতার জন্ম=নিম্ন মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মন পরিবারে
5. মমতার মাতার নাম=গায়ত্রী দেবী
6.মমতার পিতার নাম=প্রমিলেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
7. মমতার বাবার মৃত্য=মমতার 17 বছর বয়সে চিকিৎসার অভাবে
8. মমতার শিক্ষা=ইতিহাসে অনার্স,ইসলামিক ইতিহাসে M.A.এবং L.L.B.(ক.বি.)
9. মমতার ডিগ্রি কলেজ=যোগমায়াদেবী
10. মমতার Law কলেজ=যোগেন্দ্রচন্দ্র কলেজ
11. মমতার শখ=ছবি আঁকা ও কবিতা লেখা
12. মমতার পেশা=পাড়ার হরিনঘাটা দুধের কাউন্টারে 25টাকা মাস মাইনের সেলস গার্ল.পরবর্তীকালে সক্রিয় রাজনীতি.
13. মমতার জীবন যাপন ও পোষাক=অত্যন্ত সাধারন/সাদামাটা
14. মমতার রাজনীতিতে প্রবেশ=1970তে ছাত্র পরিষদের হাত ধরে যোগমায়াদেবী কলেজে ছাত্র সংগঠন স্থাপন
15. মমতা পঃবঙ্গ মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী হন=1976
16. সর্বপ্রথম কোনো নির্বাচনে মমতা জয়লাভ করেন=1984.লোকসভা নির্বাচনে
17. সর্বকনিষ্ঠ MP(বর্তমানে মহিলা MP) হিসাবে মমতা নির্বাচিত হন=1984
18. যাকে পরাজিত করে সর্বকনিষ্ঠ MP হিসাবে মমতা নির্বাচিত হন=সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়[CPM(I)]
19. যে কেন্দ্র থেকে মমতা সর্বপ্রথম কোনো নির্বাচনে জয়লাভ করেন=যাদবপুর
20. মমতা যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী হন=1988
21. দক্ষিন কোলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে সর্বপ্রথম মমতা নির্বাচনে জয়লাভ করেন=1991
22. দক্ষিন কোলকাতা লোকসভা কেন্দ্র থেকে মমতা কতবার জয়লাভ করেন=7বার(91,96,98,99,04,09)
23. কেন্দ্রে প্রথম মহিলা হিসাবে মমতা মানব সম্পদ উন্নয়ন,ক্রীড়া ও যুবকল্যান দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী হন=1991
24. কেন্দ্রে প্রথম কোনো মন্ত্রক থেকে মমতা পদত্যাগ করেন=1993
25. কংগ্রেস-CPI(M) গোপন আঁতাতের অভিযোগ তুলে মমতা কংগ্রেস ত্যাগ করেন=1997
26. মমতা পৃথক তৃনমূল কংগ্রেস গঠন করেন=1997
27. মমতার তৃনমূল কংগ্রেস দল নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতিলাভ করে=1লা জানু.1998***
28. 1998সালের দ্বাদশ লোকসভা নির্বাচনে মমতার তৃনমূল কং দল কটি আসনে জয়লাভ করে=7টি
29. 1999 সালের ত্রয়োদশ লোকসভা নির্বাচনে মমতার তৃনমূল কং দল কটি আসনে জয়লাভ করে=8টি
30. প্রথম NDA জোটে মমতা যোগদান করেন=1999
31. NDA জোটে যোগদান করে মমতা প্রথম রেলমন্ত্রী হন=1999
32. কেন্দ্রে রেলমন্ত্রী হিসাবে মমতার প্রথম রেলবাজেট পেশ করেন=2000
33. সর্বপ্রথম রেলমন্ত্রী হিসাবে শিয়াদহ-নিউদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস চালু করেন=মমতা
34. মমতা রেকর্ড সংখ্যক(19টি) নতুন ট্রেন চালু করেন=2000-2001
35. তেহেলকা কান্ডের জন্য NDA থেকে মমতা সমর্থন প্রত্যাহার করেন=2001
36. CPI(M)কে পঃবঙ্গ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মমতার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট=2001
37. 2001 সালের ত্রয়োদশ পঃ বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মমতার তৃনমূল কংগ্রেস দল কটি আসন পায়=60টি(226টি লড়াই করে)
38. কংগ্রেসের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারনে পুনরায় মমতার NDAকে সমর্থন=জানু.2004
39. প্রথম মহিলা হিসাবে মমতা কয়লা ও খনি মন্ত্রী হন=জানু.2004(20শে মে পর্যন্ত)
40. তৃনমূল কংগ্রেসের একমাত্র MP হিসাবে মমতার জয়লাভ=2004(চতুর্দশ লোকসভা)***
41. জোর করে জমি অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে বুদ্ধদেব সরকারের বিরুদ্ধে মমতার আন্দোলন শুরু=2005
42. 2006 সালের চতুর্দশ পঃ বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে মমতার তৃনমূল কংগ্রেস দল কটি আসন পায়=30টি(257টিতে লড়াই করে)
43. সিঙ্গুরে জোর করে জমি অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে মমতার আন্দোলন শুরু=18ই জুলাই.2006
44. সিঙ্গুরে জোর করে জমি অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে মমতার বিধানসভায় প্রবেশ এবং তৃনমূল বিধায়কদের বিধানসভা ভাঙচুর=2006
45. নন্দীগ্রামে SEZ গঠন ও কেমিক্যাল হাব স্থাপনের বিরুদ্ধে ভূমি উচ্ছেদ কমিটির আন্দোলনকে মমতার সমর্থন=মার্চ.2007
46. সিঙ্গুরে জমি আন্দোলন যোগ দিতে গিয়ে পুলিশের হাতে মমতা নিগৃহীত=29শে Nov.2007
47. সিঙ্গুরে জোর করে জমি অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে বাইপাসে মমতার অনশন শুরু=3রা Dec.2007
48. 26দিন পর রাজ্যপালের আশ্বাসে মমতার অনশন ভঙ্গ=28শে Dec.2007
49. নন্দীগ্রামে CPI(M) এর সঙ্গে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সংঘর্ষে মমতার কমিটিকে সমর্থন=মে.2008
50. সপ্তম পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিন24পরগনা জেলা পরিষদ সহ মমতার দলের ব্যাপক সাফল্যলাভ=জুন. 2008
51. সিঙ্গুরে জোর করে জমি অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে ফের মমতার অনশন শুরু=24শে Aug.2008
52. পুনরায় মমতা কংগ্রেসের নেতৃত্বে UPA জোটে সামিল=2009
53. 2009 এর পঞ্চদশ লোকসভা নির্বাচনে মমতার তৃনমূলের জয়লাভ=19টি আসনে
54. দ্বিতীয়বার রেলমন্ত্রী হিসাবে মমতার শপত গ্রহন=2009
55. ভারতে প্রথম দূরন্ত এক্সপ্রেস ও লেডিজ স্পেশাল ট্রেনের সুচনা করেন=মমতা
56. রেলমন্ত্রী থেকে পুনরায় মমতার পদত্যাগ করেন=2011(পঃবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিযুক্ত হবার কারনে)
57. কোলকাতা ও বিধাননগর পৌর নির্বাচনে মমতার দলের জয়লাভ=2010
58. কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে পঃবঙ্গ থেকে 34বছরের বাম সরকারকে উৎখাত=2011
59. 2011-র বিধানসভার নির্বাচনে তৃনমূল কংগ্রেসের মোট আসন=184
60. প্রথমবার পঃবঙ্গের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী(অষ্টম) হিসাবে মমতার শপত গ্রহন=20শে মে.2011
61. ক্যাবিনেটের প্রথম মিটিং-এ সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক চাষীদের 400একর জমি ফেরতের জন্য মমতার সিধান্ত ঘোষনা=20শে মে.2011
62. সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক চাষীদের 400একর জমি ফেরতের জন্য মমতার বিধানসভায় আইন পাস=13ই জুন.2011
63. শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাস পয়লা বেতন ও দ্রুত পেনশনের জন্য মমতা সিধান্ত নেন=জুন.2011
64. দার্জিলিং সমস্যার সমাধানের জন্য মমতা পৃথক GTA গঠন করেন=2011
65. বৃষ্টির জল সংরক্ষন করে পরে ব্যবহার করার জন্য মমতার “জল ধরো,জল ভরো” প্রকল্প গ্রহন=2011
66. মহিলারা যাতে নির্ভয়ে ও নিঃসঙ্কোচে থানায় অভিযোগ জানাতে পারে এবং তাদের নিরাপত্তা রক্ষিত হয় তার জন্য মমতার “মহিলা থানা” স্থাপনের প্রকল্প গ্রহন=2011
67. পঃবঙ্গের কৃষক ও চাষীরা যাতে তাদের কৃষিজাত দ্রব্য ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারে তার জন্য মমতার 341টি ব্লকে একটি করে “কিষান মান্ডি স্থাপন” করার প্রকল্প গ্রহন=2012
68. রাজ্যের জনগনকে ন্যায্য মূল্যে ঔষধ কেনার সুযোগ করে দেবার জন্য মমতার“ন্যায্য মূল্যের ঔষধের দোকান” স্থাপনের প্রকল্প গ্রহন=2012
69. আসানসোলে মমতার রাজ্যের প্রথম মহিলা থানা স্থাপন/উদ্বোধন=জানু.2012
70. FDI প্রশ্নে মতবিরোধের কারনে দ্বিতীয় UPA থেকে মমতার সমর্থন প্রত্যাহার=2012
71. প্রথম কালামকে এবং পরে প্রনববাবুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে মমতার সমর্থন=2012
72. টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে বিশ্বের 100 জন ব্যক্তির মধ্যে মমতাকে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির শিরোপা=2012
73. ব্লুমবার্গ মার্কেট ম্যাগাজিনের বিচারে বিশ্ব অর্থনীতির 50 জন ব্যক্তির মধ্যে মমতাকে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির শিরোপা=2012
74. বিভিন্ন অসুখের স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা(MRI,সিটি স্ক্যান,এক্সরে,সব রকম রক্ত পরীক্ষা) করার জন্য মমতার ন্যায্য “মূল্যের প্যাথলজি সেন্টার” স্থাপন=2013
75. স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সম্মানজনকভাবে জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করার জন্য মমতার“মুক্তিধারা” প্রকল্প গ্রহন=2013
76. বিশেষ শিশুদের জন্য হিউম্যান মিল্ক ব্যাঙ্ক স্থাপনের জন্য মমতার “মধুর স্নেহ” প্রকল্প গ্রহন=2013
77. নারী শিক্ষার প্রসার,বাল্য বিবাহ রোধ এবং নারী পাচার রোধের জন্য 18 বছরের উর্দ্ধে বয়স্ক কন্যাদের জন্য মমতার “কন্যাশ্রী” প্রকল্প গ্রহন=2013
78. প্রতি বছর কন্যাশ্রী দিবস পালন করার কথা মমতার ঘোষনা=14ই আগস্টকে.
79. বেকার যুবক ও যুবতীদের কর্ম সংস্থানের তথা স্বনির্ভর করার জন্য উদ্যোগ ভাতা প্রদানের উদ্দেশ্য মমতার “যুবশ্রী” প্রকল্প গ্রহন=2013
80. সারদা চিটফান্ড(আর্থিক কেলেঙ্কারি)তে মমতার দলের নেতা মন্ত্রীদের জড়িত থাকার অভিযোগ=এপ্রিল.2013.
81. সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারি জড়িত থাকার অভিযোগ সত্ত্বেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে মমতার দলের 15টি জেলা পরিষদে জয়লাভ=2013
82. প্রকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে অর্থাৎ ক্ষতির হাত থেকে কৃষক ও চাষীদের বাঁচাতে শস্য বীমার জন্য মমতার “আমার ফসল আমার গোলা” প্রকল্প গ্রহন=2014
83. বাংলার ক্ষুদ্র,ছোট ও হস্তশিল্পের উন্নতি ও প্রসার সাধনের জন্য মমতার “বিশ্ব বাংলা” প্রকল্প গ্রহন=2014
84. তফশিলী জাতি ও উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার উন্নতি সাধনের জন্য সরকারি আর্থিক সাহায্য দানের উদ্দেশ্য মমতার “শিক্ষাশ্রী” প্রকল্প গ্রহন=2014
85. যে সব পরিবারের মাসিক আয় 25 হাজার বা তার কম সেই সব পরিবারের বেকারদের ছোট বাস,ট্যাক্সি,ম্যাটাডোর কেনার জন্য 1লক্ষ টাকা সরকারী সাহায্যের উদ্দেশ্য মমতার “গতিধারা” প্রকল্প গ্রহন=2014
86. যে সব মানুষ কোন প্রকল্পে 20দিন কাজ করছে সেই সব মানুষকে অন্য প্রকল্পের অধীনে অতিরিক্ত 20দিন কাজ দেবার জন্য মমতার “কর্মশ্রী” প্রকল্প গ্রহন=2014
87. সার্বিক স্বাস্থ্যবিধানের জন্য সরকারি সাহায্যে শৌচাগার নির্মানের ব্যবস্থা করার জন্য মমতার “মিশন নির্মল বাংলা” প্রকল্প গ্রহন=2014
88. 2014 সালের ষষ্ঠদশ লোকসভা নির্বাচনে সারদা আর্থিক কেলেঙ্কারি জড়িত থাকার অভিযোগ সত্ত্বেও একক শক্তিতে লড়ে মমতার তৃনমূলের জয়লাভ=34টি আসনে(42 এর মধ্যে)
89. সরকারি জলপ্রকল্পের মাধ্যমে পানীয় জলকে সুলভ ও সহজলভ্য করে জনগনের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য মমতার “প্রানধারা” প্রকল্প গ্রহন=2015
90. সরকারি ও আধা সরকারি বিদ্যালয়ের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেনী ছাত্রছাত্রীদেরকে সরকারি সাইকেল প্রদানের জন্য মমতার “সবুজ সাথী” প্রকল্প গ্রহন=2015
91. মানুষ যাতে সরকারের বিভিন্ন পরিসংখ্যান,বিজ্ঞপ্তি,দপ্তর,বিভাগ এবং সেগুলির পদাধিকারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে তারজন্য মমতার “এগিয়ে বাংলা” নামে একটি পোর্টাল সৃষ্টি=2015
92. দরিদ্র মানুষদের নিজের বাড়ির স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেবার জন্য তাদেরকে সরকারি জমির পাট্টা বিতরন ও গৃহ নির্মানের জন্যমমতার “নিজগৃহ,নিজভূমি” প্রকল্প গ্রহন=2015
93. UNICEF কর্তৃক নদিয়া জেলাকে ভারতের প্রথম নির্মল জেলা হিসাবে ঘোষনা মমতার অন্যতম সাফল্য=2015.
94. প্রথম ভারতীয় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যুবরাজ অ্যান্ড্রুর আমন্ত্রনে ব্রিটেনের বাকিংহাম প্রাসাদে চা চক্রে মমতার যোগদান=জুলাই.2015.
95. মমতা কর্তৃক হাওড়া,বারাকপুর,দুর্গাপুর-আসানসোল, এবং বিধাননগর এই চারটি নতুন পুলিশ কমিশনারেট গঠন=2015.
96. রেশনের মাধ্যমে দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারি মানুষজনকে দুটাকা কেজি দামে চাল ও গম প্রদানের ব্যবস্থা করার জন্য মমতার “খাদ্যসাথী” প্রকল্প গ্রহন=2016
97. স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের কর্ম সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলকশিক্ষার উন্নতির সুযোগ সৃষ্টি ও বৃদ্ধির জন্য মমতার “উৎকর্ষ বাংলা” প্রকল্প গ্রহন=2016
98. স্টিং অপারেশন অর্থাৎ মমতার দলের নেতা মন্ত্রীদের ঘুষ কান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ=মার্চ.2016
99. 2016তে ঘুষকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ সত্ত্বেও দ্বিতীয়বার বিধানসভা নির্বাচনে মমতার তৃনমূল এককভাবে লড়ে আসন জেতে=211
100. 1962-র পর পঃবঙ্গে একমাত্র একক দল হিসাবে মমতার দলের 211টি আসনে রেকর্ড জয়লাভ=2016
101. মমতার দ্বিতীয়বার পঃবঙ্গের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপত গ্রহন=27শে মে.2016
102. সিঙ্গুরের জমি চাষীদের ফেরত দেবার জন্য সুপ্রীমকোর্টের রায় মমতার পক্ষে যায়=31শে Aug.2016
103. সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে বিদ্যালয় পাঠ্যসূচি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য মমতার ঘোষনা=14ই.Sept.2016
104. ঐতিহাসিক “সিঙ্গুর দিবস” হিসাবে পালন করার জন্য মমতার ঘোষনা=14ই সেপ্টেম্বরকে
105. ভারতের একমাত্র ব্যক্তি যিনি রোমের ভাটিকান সিটির পোপের আমন্ত্রনে মাদার টেরেজাকে সন্ত ঘোষনার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেন্ট পিটার্স ব্রাসিলিকা চার্চে উপস্থিত হন=সেপ্টেম্বর.2016
106. ভারতের প্রথম মহিলা রেলমন্ত্রী হন কে=মমতা ব্যানার্জী
107. ভারতের প্রথম মহিলা কয়লামন্ত্রী হন কে=মমতা ব্যানার্জী
108. ভারতের প্রথম মহিলা ক্রীড়া ও যুবকল্যান মন্ত্রী হন কে=মমতা ব্যানার্জী
109. ভারতের প্রথম মহিলা হিসাবে আঞ্চলিক দল তৈরি করেন =মমতা ব্যানার্জী
110. ভারতের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সর্বাধিক বই লেখেন=মমতা ব্যানার্জী
111. ভারতের প্রথম উচ্চশিক্ষিতা মহিলা মুখ্যমন্ত্রী=মমতা ব্যানার্জী[BA(Hons),MA,LLB
(সংগৃহিত)

Mamata Banerjee’s Life In Pics