Logo

কবি আশরাফ রোকনের তিনটি কবিতা

অনিন্দ্য বাংলা
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৪, ২০২০
  • শেয়ার করুন

কবি আশরাফ রোকনের কবিতা
১.বৈশাখি কবিতা ।।

আমার কিছু ইচ্ছে হলো বৈশাখের লু ,আচমকা কালবৈশাখি চোখেমুখে এসে লাগা হাওয়ায়
মাড়াখলার ঘাস ও খড়ের সোনালি গুঁড়ো,
ঘামে ভেজা রাখালের কপাল,ভুরু, বুক, চুলে ও শ্বাসবাতাসে মিশে যাওয়া আনন্দিত সময়স্রোতে ইচ্ছেমতো উড়ে এসে বসেছে,যারা উড়েও যাবে এখানে আজও রাজটীকার মতো মনে হয় যাদের উড়নচণ্ডী মন,
হয়তো-বা পীঠে লেগে থাকা ফুঙ্গার মতোই সারাক্ষণ এখানে যে
বিদ্ঘুটে ক্ষত আমারও সারাতে পারি না এতোটুকু চিন্তার আগেই ভুলে যেতে চাই না ছেড়ে কখনো বৈশাখের ধানের জগত,শৈশব এক গরুগাড়ি
সতত বহন ক’রে নিয়ে যায় আমাকে যেনো দামাল শিশু কিছু ইচ্ছে আমার পাকা ধানের গন্ধে নিমীলিত খড়ে পলাবুঞ্জি খেলা খেলে
বাতাসের পাশে মধুরেণুসম ঝরে নিয়ত যে-রকম প্রতিটি ধানফুলে গোপনে জড়িয়ে থাকে নিয়রজলে বাঞ্ছিত উপস্থিতি,ধানপাতা যা দেখেনা
নিভৃত কিছু ইচ্ছে আমারও ষাঁড় হয়ে নেমে গেছে গঙ্গাসাগর বিলে
যেনোবা বলুয়া ফুলের ছায়ায় উক্কাবারুই পাখি হয়তো-বা আমি
উর্ধ্বগমনের গীতে মুৃখর নিজের মুখ লুকিয়ে রেখে আকাশে
আমার কিছু ইচ্ছে হলো উড়ছি যে নিজেরই বিরুদ্ধে নিজে
বড় গোপাটের চিকনা মাটির মমতায় আটকে পড়া খঞ্জনা পাখি!

২. তিমির ।।

একটা অজানা তিমিরই হয়তো-বা
সারাক্ষণ ঘিরে আছে আমাদের দৃষ্টি,
চতুর্দিক থেকে কালো মেঘেরা এসেই
ভ’রে তুলছে সাদা মনের আকাশটা :

চোখে কিছুই দেখি না আমরা তাইতো
মাঝে মাঝে দিনকেও রাত মনে হয়,
মনে হয় রাতের ছায়ারা সহসাই
সময়ের আগেভাগে দাঁড়িয়ে এখানে;

সব পথে পথে একা, এক-একাকার :
যেনো বহুদিন নিজেই নিজের মুখ
খুঁজে দেখে পায় নি যে ঘনঘোরে কভু,
সে তিমির আমাদের রেখেছে আলাদা।

৩.একটা প্রাচিন
সঙ্গীতের অনুভূতি থেকে
—————-

অবচেতনের কালো ঘাস
ঢেকে ফেলে নি আজও
সবটুকু সবুজতা তাই,
অন্ধবন্ধ সব পথ জুড়ে
একটা আলোর গান গাই।

যে আলো মনে মনে সারাক্ষণ
মনে হয় গহিন অরণ্যে
দলছুট মহিষের ছবি আঁকি,
কিছু সংশয়হীন পুষ্পরেণু দিয়ে
অচিনপ্রাচিন পাহাড়ের গাত্রে গাত্রে–

গোত্র ভুলে যাওয়া সহসা
কারোর চিত্তের মহড়ায়
রাত্রিদিন সকল সময়
পাখিরাই গানে গানে সদা
ভরিয়ে রাখে পথ আলোয়
বেপথু পথিক ঠিক ঠিক
পেয়ে যায় পথের নিশানা
চিনে নিতে ভুল
করে না তো আবারও আর।

আ.রো. ৮/৪/২০১৯