Logo

করোনাকালে প্রসূতির চিন্তার কিছু নেই

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, জুলাই ৯, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: করোনাকালে নিয়মিত চেকআপ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভাটা পড়েছে গর্ভবতী মায়েদের৷ টেনশন বাড়ছে প্রবল। হঠাৎ সমস্যা হলে কোথায় যাবেন, হাসপাতাল ভর্তি নেবে কি না বা নিলেও সেখান থেকে যদি সংক্রমণ হয়! তার উপর সুযোগ বুঝে বেসরকারি হাসাপাতালগুলো টাকা নিচ্ছে দ্বিগুণের বেশি৷ আবার অনেক হাসাপাতালে ভর্তি হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে৷ বেশি টেনশন করলে নিজের ও ভাবী সন্তানের ক্ষতি হতে পারে জেনেও দু-চোখের পাতা এক করতে পারছেন না তারা৷ ভেবে পাচ্ছেন না, কোন পথে আসবে মুক্তি?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বাংলাদেশে করোনা-আক্রান্ত নারীর দুই শতাংশই গর্ভবতী। এ কারণে এ সময়ে গর্ভধারণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

অবশ্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর গর্ভবর্তী মায়েদের জন্য নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। গর্ভবতী মায়েদের ঘরবন্দি থেকে সাবধানে চলাফেরা করতে পরামর্শ দিয়েছে অধিদপ্তর।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু বলেন, গর্ভবতী মায়েদের সেবা দেয়ার জন্য ২৪ ঘন্টা হাসপাতাল খোলা রাখা হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার দৃঢ়প্র্রতিজ্ঞ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জনগণ যাতে ঘরে বসেই ডিজিটাল সেবা পায়, সে ব্যবস্থা সরকার করেছে। কর্মস্থলে বয়স্ক ও গর্ভবতী মহিলারা যাতে না আসে, সেই ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে। গর্ভবতী মায়ের চিকিৎসাসেবা দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। তাই করোনা-আক্রান্ত হলে গর্ভবতী মা হাসপাতালে এসে নিঃসন্দেহে চিকিৎসা নিতে পারবে। গর্ভবতী মায়েরা বাসায় থেকে নিয়মিত ফোন কলের মাধ্যমেও ডাক্তারের সেবা নিতে পারবেন।

তিনি বলেন, গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। সেখানে সহজেই তারা স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারেন। কোনওমতে সরকারি হাসপাতালে পৌঁছে যেতে পারলেই আর চিন্তা নেই৷ সেখানে সব সেবা আছে৷ মায়েদের পুষ্টির দিকে খেয়াল রাখা, স্বাস্থ্যবিধি বোঝানো, রক্তচাপ-সুগার-হিমোগ্লোবিন মাপা, টিটেনাস ইনজেকশন দেওয়া, সব করা হচ্ছে এখানে। সম্ভাব্য প্রসবের দু’-চার দিন আগে ভর্তি হলে কোভিড পরীক্ষাও করিয়ে নেওয়া হচ্ছে৷ কাজেই অত টেনশন করার কিছু নেই৷

কভিড-১৯ মহামারির অবস্থাকে বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর ইতোমধ্যে কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম হচ্ছে- নিবন্ধিত নবদম্পতি যাতে দেরিতে সন্তান নেয়, সে জন্য নিবন্ধীকরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে তাদের গিফট বক্স দেওয়া হচ্ছে। এসব বক্সে থাকছে গর্ভনিরোধক এবং তথ্য, শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ (আইইসি) সামগ্রী। দুর্গম এলাকায় প্রথম সারির কর্মীদের চুক্তিবদ্ধ নিয়োগের মাধ্যমে এবং গর্ভবর্তী নারীদের নিবন্ধীকরণ ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিবীক্ষণ এ কার্যক্রমকে বাস্তবায়িত করবে। শহরের বস্তিতে এবং গার্মেন্ট শিল্পে যুক্ত নারীদের প্রথম টার্গেট গ্রুপ ধরলে এ উদ্ভাবনী কার্যক্রম আরও প্রসারিত হবে।

সাহান আরা বানু বলেন, গর্ভবতী মায়েদের সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। সামাজিক দুরত্ব মেনে চলাফেরা করবে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরাও ঝুঁকির মধ্যে কাজ করছেন। গর্ভবতী মায়েদের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলেই স্থানীয় হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের কাছে মাঠকর্মীদের ফোন নম্বর দেয়া আছে তারা কোন সমস্যায় পড়লেই যেন কল করেন।