Logo

করোনায় আক্রান্ত ৪ লাখের মধ্যে ১লাখের বেশী সুস্থ হয়ে উঠেছেন

অনিন্দ্য বাংলা
শনিবার, মার্চ ২৮, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক. দেশে আর নতুন করে কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। গতকাল পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ৩৯ জন। এছাড়া সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন।

গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। বিশ্বের ১৯৭টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাসটি। এখন পর্যন্ত এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা চার লাখ ২১ হাজার ৩৬৭ এবং মারা গেছেন ১৮ হাজার ৮১০ জন। অপরদিকে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে এক লাখ আট হাজার ৩৮৮ জন।

বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ।  সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন পাঁচজন।
করোনার বিস্তাররোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। চারটি দেশ ও অঞ্চল ছাড়া সব দেশ থেকেই যাত্রী আসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব বিপণিবিতান। এছাড়া মুলতবি করা হয়েছে জামিন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি ছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারিক কাজ এমনকি মাদারীপুরের শিবচর উপজেলাকে লকডাউনও ঘোষণা করা হয়েছে। ভাইরাসের সংক্রমণরোধে আগামী  ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ সব ধরনের গণপরিবহন। এ কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তার জন্য দেশের সব জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র বাহিনী।
পাশাাপাশি শোনা যাচ্ছে আরো সুুুুখবর!

দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েক লাখ হলেও তাদের সুস্থ করে তুলতে কার্যকর ওষুধের অভাব হবে না আর এ মুহূর্তেও এক লাখ রোগীর চিকিৎসা দিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরকারের কাছে মজুদ রয়েছে ইতিমধ্যে দেশের বেশকিছু খ্যাতনামা ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে ওষুধ উৎপাদনে নির্দেশনা দিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
দেশের কোটি কোটি মানুষ যখন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সুচিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় তখনই বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা শোনালেন এমন আশার বাণী।
তারা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরপরও যদি করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় সে ক্ষেত্রে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। করোনার রোগীকে সুস্থ করার মত কার্যকর ওষুধ দেশেই রয়েছে।
বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বিল্লাল আলম মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) বিকেলে জাগো নিউজকে জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া জ্বরে ব্যবহৃত হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন ওষুধের সঙ্গে এজিথ্রোমাইসিন সাত দিন সেবনে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর চিকিৎসা পদ্ধতি এবং নিজেদের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে দেশে করোনা আক্রান্তদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন সুপারিশ করেছে। ওই সুপারিশে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন ওষুধের সঙ্গে এজিথ্রোমাইসিন সেবনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে জানান ডা. বিল্লাল আলম।

জানা গেছে, সোসাইটি অব মেডিসিনের সুপারিশকৃত স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন অনুসরণ করে সারাদেশের চিকিৎসকরা করোনা আক্রান্তদের একই ধরনের চিকিৎসাসেবা দেবেন।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ইনসেপ্টা, ডেল্টা, এসিআই, জেসন, রেডিয়েন্ট ও ডেল্টা ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যালেরিয়া জ্বরের ওষুধ উৎপাদন করে।
সূত্র জানায়, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে চিকিৎসাসেবা যেন ব্যাহত না হয় সে জন্য বেক্সিমকো, স্কয়ার ফার্মারসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এ দুটি ওষুধ উৎপাদনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া জ্বরে ব্যবহৃত হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন ও ক্লোরোকুইন কার্যকর বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই তারা করোনা রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিতে স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন প্রণয়ন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ইতিমধ্যেই এক লাখ রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মতো ওষুধ মজুদ করেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সব মন্ত্রণালয় করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তদুপরি যদি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তাতেও দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কয়েক লাখ রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার মতো কার্যকর ওষুধের মজুদ ও সক্ষমতা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তাছাড়া গত মঙ্গলবার জাপানের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যানজেস ইনকর্পোরেট দাবি করেছে, তারা এবং তাদের ব্যবসায়ীক পার্টনার ওসাকা ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এটি প্রাণীর ওপর পরীক্ষা করা হবে।

এর আগে, গত সপ্তাহে চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগে থেকেই প্রস্তুত করে রাখা অন্য রোগের ওষুধ করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ভালো ফল দিয়েছে। তবে ফুজি ফিল্মের তৈরি ওই ওষুধ ম্যালেরিয়া রোগের চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য তৈরি করা, কেবল করোনাভাইরাসের জন্য নয়।
এছাড়াও গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কথা বলেছেন। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকটিয়াস ডিজিস এবং যুক্তরাষ্ট্রের বায়োটেক প্রতিষ্ঠান মডের্না যৌথভাবে ওই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা করছে।