Logo

করোনা আক্রান্ত মেয়ের সংস্পর্শে এসেও রোগী দেখলেন চিকিৎসক, আক্রান্ত তিনিও

অনিন্দ্য বাংলা
রবিবার, জুলাই ৫, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: বাসায় করোনা আক্রান্ত মেয়ের সংস্পর্শে এসেও প্রাইভেট চেম্বারে টানা ১১ দিন ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসা দিয়েছেন এক চিকিৎসক। পরে নমুনা পরীক্ষায় ওই চিকিৎসকেরও করোনা শনাক্ত হয়েছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি চীফ মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত এই চিকিৎসকের নাম ডা. এফএমএ জাহিদ। তিনি রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সাবেক সম্পাদক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডা. জাহিদের মেয়ে রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। গত ২২ জুন তার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর তিনি বাবাসহ পরিবারের সঙ্গেই থেকেছেন।

এ সময় একই পরিবারে থেকেও ডা. জাহিদ টানা ১১ দিন ডায়াবেটিস রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছেন। প্রতিদিন তার চেম্বারে রাজশাহীর আলুপট্টিতে ডায়াবেটিস কল্যাণ কেন্দ্রে অন্তত ১০০ জন করে রোগী দেখেছেন। এসব রোগীর রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপ করার পরীক্ষার জন্য তিনি তার ল্যাবে ১০০ টাকা করে চার্জ নেন।

৩ জুলাই ডা. জাহিদ ও তার মেয়ের করোনা পরীক্ষা করা হলে মেয়ের নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। তবে ডা. জাহিদ ও তার স্ত্রীর করোনা পজিটিভ আসে।

এ বিষয়ে ডা. জাহিদ বলেন, আমার কোনো উপসর্গ নেই। তারপরও করোনা পজিটিভ এসেছে। আমি ও আমার স্ত্রী থাকি সাত তলায়। আর মেয়ে, ছেলে ও সন্তানদের নানু থাকে ছয়তলায়। তবে মাঝে মাঝে খাবার টেবিলে মেয়ের কাছে গিয়েছি। মাঝে মাঝে মেন্টাল বুস্ট-আপ করার চেষ্টা করেছি। সে সময় মেয়ের কাছ থেকে আমার শরীরে করোনা আসতে পারে। অথচ ছেলে ও তাদের নানু করোনা আক্রান্ত হয়নি।

বাসায় করোনা রোগীর সংস্পর্শে থেকেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, মাস্ক পরেই রোগীদের চিকিৎসা দিয়েছি। রোগীদের সমস্যা হলে তো হতো। এখনো কারো সমস্যা হয়নি। হলে তো জানতে পারতাম।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্রনাথ আচার্য্য বলেন, বাসায় করোনা রোগী থাকলে তাকে অবশ্যই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। চিকিৎসা দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তার টেস্ট করে দেখতে হবে। কোনো পজিটিভ রোগীর কাছে আসলে তাদের অবশ্যই চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে।

রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বলেন, আইন সবার জন্যই সমান। বাসায় করোনা রোগী থাকলে স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে থাকতে হবে। এটা ডাক্তার হোক আর সাংবাদিক হোক-সবার জন্যই এক আইন। বাসায় করোনা রোগী থাকার পরও মানুষের সংস্পর্ষে আসা অপরাধ। আর অসুস্থ ডায়াবেটিস রোগী দেখা আরো বড় অপরাধ।

তিনি বলেন, তার সংস্পর্শে যারা এসেছেন, তাদের প্রত্যেকের বাড়ি চিহ্নিত করে লকডাউন করতে হবে। এজন্য আমি সিটি করপোরেশনকে অবগত করবো।