Logo

করোনা মোকাবিলায় ড্রোন!

অনিন্দ্য বাংলা
শুক্রবার, এপ্রিল ১৭, ২০২০
  • শেয়ার করুন

করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশেও ড্রোনসহ ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে লাখো মানুষকে কোয়ারেনটাইনে ঘরে আবদ্ধ রেখেছিল চীনা। জনগণের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে ড্রোনের সাহায্য নেওয়া হয়েছিলো। ভারতের মুম্বাই, চেন্নাইসহ জনবহুল শহরগুলোতে প্রশাসনের সঙ্গে বাড়তি সক্ষমতা যুক্ত করেছে ডিজিটাল প্রযুক্তির ‘ড্রোন বাহিনী’। বিভিন্ন এলাকা থেকে থার্মাল ইমেজের মাধ্যমে সন্দেহভাজন রোগীকে খুঁজে বের করা, ওষুধ পৌঁছে দেওয়া সবই সামলাচ্ছে করোনা কমব্যাট ড্রোন। শুধু নজরদারি নয়, যেখানে গাড়ি যেতে পারে না এমন সরু গলি ও ভবনের ফাঁকা স্থান, বস্তিসহ নানা এলাকা জীবাণুমুক্ত করতেও তারা সহায়তা নিচ্ছে ড্রোনের।

এদিকে লকডাউনের নীতিমালা অমান্য করলে ড্রোন এসে লোকজনকে আইন মনে করিয়ে দিচ্ছে যুক্তরাজ্যের সারে ও সাসেক্সে। ‘স্কাই টক’ নামে এই ড্রোন রেকর্ড করা মেসেজ শোনায়, যাতে বলা হয়, ‘আপনারা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের নীতিমালা ভঙ্গ করছেন। আপনারা জীবনকে হুমকির মুখে ফেলছেন। দয়া করে দল ভেঙে বাসায় চলে যান।’ এর আগে এই ব্যবস্থা দেখা গেছে ইতালি ও স্পেনে। প্রতিবেশী ভারতের মুম্বাই, দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাইয়ে করোনা প্রতিরোধে সংকীর্ণ স্থানে ড্রোন দিয়ে নজরদারি ও জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে।

রাজধানী ঢাকার ৫০টি থানার মধ্যে ৩৩টি থানায় ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। গত ৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশে আক্রান্ত এক হাজার ২৩১ জনের মধ্যে বেশির ভাগ ঢাকার। নারায়ণগঞ্জ, কোরানীগঞ্জ, মিরপুর ও বাসাবোর পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অঘোষিত কারফিউ বলবৎ রয়েছে। ঢাকার অন্তত ৬০টির বেশি এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মোহাম্মদপুর, আদাবর, বছিলা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অলিগলিতে অনেক মানুষের জটলা। একই চিত্র মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পেও।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘অনেক এলাকায় লকডাউন ঠিকমতো মানা হচ্ছে না। লকডাউনের মধ্যেও মানুষ ঘরের বাইরে আসছে, যা উদ্বেগজনক।’ জনবহুল ঢাকা শহরে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে মানুষকে ঘরে আটকে রাখাটা। এ ক্ষেত্রে যেসব এলাকা লকডাউন করা হয়েছে সেসব এলাকায় মানুষের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ, জীবাণুনাশক প্রয়োগে ড্রোন ব্যবহারে সুফল পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। জানতে চাইলে তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘জনবহুল ঢাকা শহরে এখনো সামাজিক দূরত্ব সঠিকভাবে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এটি নিশ্চিত করতে ড্রোনসহ অন্যান্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তা নেওয়া যায়। এটি সহজেই করা যায়।’

সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ডাটা সফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব জামান বলেন, ‘সিঙ্গাপুর, চীনসহ আরো অনেক দেশ জিওসেন্সিং, ড্রোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। লকডাউন এলাকার কেউ বের হলেই সঙ্গে সঙ্গে পাশের থানায় নোটিফিকেশন চলে যাবে। প্রযুক্তিকে অনেকভাবেই ব্যবহার করে করোনা মোকাবেলা করা যায়। কিন্তু এগুলো সফলভাবে ব্যবহারের জন্য একটি দারুণ সমন্বয় প্রয়োজন, যেটা আমাদের মাঝে অনুপস্থিত।’ এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘টেলিটকসহ আমাদের মোবাইল অপারেটরগুলো কলপ্যাটার্ন, এসএমএস বিশ্লেষণ করে বিগডাটা অ্যানালিসিস করে কিছু প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের জন্য ড্রোন ব্যবহার করা মোটেই কঠিন কিছু না।’