Logo

খাস জমি বন্দোবস্ত সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২১ (আপডেট)

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
  • শেয়ার করুন

আসুন জেনে নিই, খাস জমি কি ?

খাস জমি কি: কোনো জমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয় এবং সেই জমিগুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং সরকার,এই জমিগুলি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন তাহলে উক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি বলে।

১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের ৭৬ ধারার ১ উপধারায় খাস জমি সম্বন্ধে বলা হয়েছে। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে যে,কোনো ভূমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয় এবং সেই জমিগুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে তাহলে সরকার,এই ভূমিগুলি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন,অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন উপরোক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি হিসাবে বুঝাবে।

তবে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের যথা বন বা পূর্ত কিংবা সড়ক ও জনপথ এর স্বত্বাধীন বা মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন ভূমিকে সরকারের খাস জমি হিসাবে গন্য করা যাবে না।

(১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের ৭৬ ধারা এবং ৮৭ ধারা) (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এর সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদ)

অধিকার:

১৯৯৫ সালের খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা এবং ১৯৯৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত খাস জমি সংক্রান্ত সংশোধিত গেজেট মতে-

কোনো জমি গুলি খাস জমি তা জানার অধিকার।

ভূমিহীন ব্যক্তি হলে খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।

ভুলক্রমে কোনো ব্যক্তির জমি খাস জমি হিসেবে গণ্য হলে কিংবা কোন ভূমিহীন ব্যক্তিকে বন্দোবস্ত দিলে তা বাতিল করার অধিকার।

খাস জমি সংক্রান্ত কোন আপত্তি থাকলে আপিলের অধিকার।

ভূমিহীনরা খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার জন্য দরখাস্ত দাখিলের জন্য সময় পাবার অধিকার।

জেলা প্রশাসক কর্তৃক খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর ১ কপি পূনর্বাসন কার্ড পাবার অধিকার।

যদি কোন ভুমিহীন সমিতি থাকে তাহলে ভুমিহীন সমিতির খাস জমি বরাদ্দ পাবার অধিকার।

ভুমিহীন পরিবার কর্তৃক খাস জমির জন্য প্রদত্ত সেলামি/টাকা প্রদানের এবং খাজনা প্রদানের রশিদ পাবার অধিকার।

খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার ক্ষেত্রে কবুলিয়ত ফরম/স্বীকৃতি পত্রের এক কপি নিজের কাছে রাখার অধিকার।

জমি দখলে রাখার অধিকার এবং উত্তরাধীকারী গণের নাম পরিবর্তনের অধিকার।

খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তা বিনা রেজিস্ট্রেশন ফিতে নিজ নাম রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অধিকার ।

খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তার সীমানা চিহ্নিত করে রাখার অধিকার।

যদি কোনো ব্যক্তি তার নিজ জমিতে হাস মুরগীর খামার বা দুগ্ধ খামার করে থাকেন তাহলে ঐ ব্যক্তির খামার সংলগ্ন খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মত্‌স খামার স্থাপনের জন্য সরকারী খাস পুকুর দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুলের চাষ, ফলের বাগান এবং রাবার বাগান করার জন্য খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার অধিকার।

লংঘন:

কোন জমি গুলি খাস জমি সে বিষয়ে না জানানো।

ভুমিহীন ব্যক্তিকে খাস জমি বরাদ্দ না দেওয়া।

ভুলক্রমে কোনো ব্যক্তির জমি খাস জমি হিসেবে গণ্য হলে তা বাতিল করার জন্য সুযোগ না দেওয়া।

খাস জমি সংক্রান্ত কোন আপত্তি থাকলে আপিলের সুযোগ না দেওয়া।

ভূমিহীনরা খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার জন্য দরখাস্ত দাখিলের জন্য সময় না দেওয়া।

জেলা প্রশাসক কর্তৃক খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর ১ কপি পূনর্বাসন কার্ড প্রদান না করা।

যদি কোন ভুমিহীন সমিতি থাকে তাহলে ভুমিহীন সমিতিকে খাস জমি বন্দোবস্ত না দেওয়া।

ভুমিহীন পরিবার কর্তৃক খাস জমির জন্য প্রদত্ত সেলামি/টাকা প্রদানের এবং খাজনা প্রদানের রশিদ প্রদান না করা

খাস জমি দখলে রাখতে না দেওয়া।

খাস জমিতে উত্তরাধীকারী গণের নাম পরিবর্তন করতে না দেওয়া।

খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তা বিনা রেজিষ্ট্রেশন ফিতে নিজ নাম রেজিষ্ট্রি করে দিতে অস্বীকার করা।

খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার পর তার সীমানা চিহ্নিত করে রাখাতে না দেওয়া।

প্রতিকার:

থানা খাস জমি বন্দোবস্ত কমিটির নিকট খাস জমি সংক্রান্ত যেকোন বিষয়ে কোনো সমস্যা দেখা গেলে লিখিত দরখাস্ত দাখিল করতে হবে ।

# কতদিনের মধ্যে?

সমস্যা সৃষ্টির তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে।

# আপিলের সুযোগ আছে কি?

আছে।

# থানা খাস জমি বন্দোবস্ত কমিটির কোন সিদ্ধান্তের বিরূদ্ধে আপিল করা যাবে।

কোথায় আপিল করতে হবে?

# জেলা প্রশাসকের নিকট।

কতদিনের মধ্যে?

# ১৫ দিনের মধ্যে

জেলা কমিটির কোন সিদ্ধান্তের বিরূদ্ধে আপিল করা যাবে কি?

# যাবে

কোথায় আপিল করতে হবে?

# জাতীয় নির্বাহী কমিটির নিকট।

কতদিনের মধ্যে?

# ৩০ দিনের মধ্যে।

খাস জমি সম্পর্কে বিস্তারিত:

যেগুলি খাস জমি হিসাবে গন্য হবে:

প্রত্যেক মৌজার এর ১ নং খতিয়ানভুক্ত সম্পূর্ণ জমি খাস জমি হিসাবে পরিচিত ৷

পরিত্যাক্ত কৃষি জমি ১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের বিধান বলে খাস করা হয়ে থাকে ৷

পয়স্তিভূমি, নদীতে বা সাগরে ভেঙ্গে যাওয়া জমি পুনরায় জেগে উঠলে এবং নদী বা সাগরে সরে যাওয়ার দরুন জেগে ওঠা ভূমি ১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের ৮৭ ধারা মোতাবেক খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে ৷

কোন হোল্ডিং বা ইহার অংশ বিশেষ (কৃষি বা অকৃষি যাই হোক) বকেয়া খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের জন্য ১৯১৩ সালের বেঙ্গল পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি এক্ট মোতাবেক দায়ের কৃত সার্টিফিকেট মামলায় নিলামকৃত ভূমি সরকার ক্রয় করলে সেই ভূমিও খাস জমি হিসাবে গণ্য হবে ৷

যে সব পরিবার বা সংস্থা প্রেসিডেন্টের আদেশ নং ৯৮/১৯৭২ এর ৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ১০০ বিঘার অতিরিক্ত যে সমস্ত ভূমি সরকারের বরাবরে সমপর্ন করেছেন সেগুলি জমিও খাস জমি হিসাবে পরিগণিত হয়েছে ৷

প্রেসিডেন্টের আদেশ নং ৯৮/১৯৭২ এর ৩ অনুচ্ছেদ এর ‘বি’ উপ অনুচ্ছেদ এবং সংস্কার অধ্যাদেশ ১৯৮৪, অধ্যাদেশ নং ১০/১৯৮৪ এর ৪ নং ধারার ৩ উপধারা লংঘন করে কোন মালিক বা সংস্থা ১০০ বিঘার ও ৬০ বিঘার অতিরিক্ত কৃষি ভূমি ক্রয় করলে উক্ত অতিরিক্ত জমি সরকারের খাস জমি হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হবে ৷

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৩ অনুচ্ছেদে (১) এর গ উপ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বলা হয়েছে যে বাংলাদেশে অবস্থিত প্রকৃত মালিকাবিহীন যে কোন সম্পত্তি উক্ত অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পতিত ভূমি/খালি ভূমি বা খাস ভূমি হিসাবে গণ্য হবে ৷

ভূমিহীন কারা:

১৯৯৮ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বরে গেজেটে প্রকাশিত সংশোধনী মতে খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার ক্ষেত্রে যে পরিবারগুলিকে ভূমিহীন পরিবার হিসাবে গণ্য করা হবে সেগুলি হলো

#যে পরিবারের বসতবাটি এবং কৃষি জমি কিছুই নাই কিন্তু পরিবারটি কৃষি নির্ভর।

#যে পরিবারের বসতবাটি আছে কিন্তু কৃষি জমি নাই অথচ কৃষি নির্ভর।

#যে পরিবারের বসতবাটি এবং কৃষি জমি উভয়ই আছে কিন্তু মোট জমির পরিমাণ ০.৫০ একরের কম, অথচ কৃষি নির্ভর।

#কৃষি নির্ভর পরিবার বলতে এক বা একাধিক সদস্য কৃষি শ্রমিক হিসাবে বর্তমানে অন্যের জমিতে নিয়োজিত আছে কিংবা বর্গাচাষ করে ৷

কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালা-

ভূমিকা: ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনাধীন কৃষি ও অকৃষি এই দুই প্রকারের সরকারী খাসজমি আছে। অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত সংক্রান্ত একটি নীতিমালা বিগত ৮ ই মার্চ ১৯৯৫ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট-এর মাধ্যমে জারী করা হয়েছে। বর্তমানে এই নীতিমালা অনুযায়ী অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। অপরদিকে দেশের প্রতিটি জেলায়ই কম বেশী কৃষি খাসজমি রয়েছে। ১৯৭২ সাল হতেই সরকারের ভূমি সংস্কার কর্মসূচী অনুযায়ী কৃষি খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বিতরণ করা হয়ে আসছিল। ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বিতরণের বিষয়ে সর্বশেষ ১৯৮৭ সালের ১লা জুলাই তারিখে একটি নীতিমালা জারী করা হয়েছিল। এই নীতিমালায় কৃষি খাসজমি কেবল ভূমিহীনদের মধ্যেই বিতরণের বিধান রাখা হয়। এই নীতিমালার আওতায় ভূমিহীনদের মধ্যেই কৃষি খাসজমি বিতরণের কার্যক্রম বহুপূর্বেই সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু ইহা একটি ব্যাপক ও জটিল কার্যক্রম বিধায় সরকার ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টন কর্মসূচী অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে উহার সময়সীমা বৃদ্ধি করেন।

খাসজমি বন্টনের ক্ষেত্রে অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়। তাছাড়া বিভিন্ন সময়ে কৃষি খাসজমি বন্টনের ফলে সর্বত্রই বন্দোবস্তযোগ্য জমির পরিমাণ কমে গেছে। অপরদিকে জনসংখ্যা ক্রমবৃদ্ধির ফলে ভূমিহীনদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বন্দোবস্ত পাওয়ার যোগ্য ভূমিহীনদের সংখ্যার তুলনায় বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাসজমির অপ্রতুলতা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। এর ফলে খাসজমি বন্টনের ক্ষেত্রে নানা প্রকার জটিলতার উদ্ভব হচ্ছে বলে সারাদেশ হতে বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ পাওয়া যায়। তাই প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাসজমি সুষমভাবে এবং অধিক সংখ্যক ব্যক্তি/পরিবারকে জমি প্রদানের লক্ষ্যে একটি সুষ্ঠু ও গণমুখী নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। সেই কারণে বর্তমান সরকার বিগত ১৩-০৮-১৯৯৬ তারিখে জারীকৃত এক আদেশের মাধ্যমে ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টন স্থগিত রাখেন।

সময়ের বিবর্তনে এবং জনসাধারণের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাস জমি বন্টনের একটি সুষ্ঠু ও গণমুখী নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এই নীতিমালার আওতায় রাংগামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি- এই তিনটি পার্বত্য জেলা ব্যতীত বাকী ৬১টি জেলার বন্দোবস্তযোগ্য সকল কৃষি খাসজমি ভূমিহীনদের মধ্যে বন্টন করতে হবে।

(ক) এই নীতিমালা জারীর তারিখ হতে কার্যকর হবে।

(খ) এই নীতিমালা জারীর পর হইতে ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টন সংক্রান্ত ইতিপূর্বে জারীকৃত সকল আদেশ, পরিপত্র, স্মারক, নীতিমালার কার্যকারিতা বাতিল হয়েছে বলে গণ্য হবে।

(গ) এই নীতিমালা জারীর পূর্বে প্রচলিত নিয়মনীতি মোতাবেক খাস কৃষি জমির যে সকল বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে, ঐ সকল বন্দোবস্ত বহাল থাকবে। তাছাড়া পূর্বের নীতিমালার আওতায় যে সকল বন্দোবস্ত কেইস জেলা প্রশাসক কর্তৃক ১৩-৮-৯৬ইং তারিখের পূর্বে চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে কিন্তু কবুলিয়ত রেজিস্ট্রি করা হয় নাই; সে সকল কেইসও বহাল থাকবে এবং কবুলিয়ত সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে দিতে হবে।

তবে ১৯৭২ইং তারিখের পর বিধি বর্হির্ভূতভাবে যদি কোনো কৃষককে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া থাকে তাহলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও প্রমাণের ভিত্তিতে থানা কমিটি জেলা কমিটির নিকট বন্দোবস্ত বাতিলের সুপারিশ করতে পারবে এবং জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত গণ্য হবে

(১৯৮৭ সালের ১লা জুলাই তারিখে জারীকৃত নীতিমালা যা বর্তমানে প্রচলিত),

(কৃষি খাস বন্দোবস্ত নীতিমালা-১৯৯৭) এবং

(১৯৯৮ সনে ১৫ সেপ্টেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত খাস জমি বন্দোবস্ত নীতিমালার সংশোধনী মতে)।

জাতীয় কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির গঠন

(১৯৯৮ সনে ১৫ সেপ্টেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত সংশোধনী মতে)৷

ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাস জমি বন্টন কার্যক্রম সম্পর্কে নীতিনির্ধারনী কার্যক্রম সম্পাদনের উদ্দেশ্যে এবং সময়ে সময়ে তদারকীর জন্য একটি জাতীয় কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটি, জেলা, পর্যায়ে একটি জেলা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি এবং উক্ত কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য থানা পর্যায়ে থানা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি গঠন করেছেন ৷ এ সকল কমিটির গঠন ও কার্যপরিধি/ দায়িত্ব নিম্নরূপ:

(ক) জাতীয় কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির গঠন:

সভাপতি

(১) মন্ত্রী, ভূমি মন্ত্রণালয়

সদস্যবৃন্দ

(২-৭) ৬ বিভাগ হইতে ৬জন সংসদ সদস্য ( মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহিত আলোচনাক্রমে মাননীয় ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত)

(৮) সচিব, ভূমি মন্ত্রণালয়

(৯) সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়

(১০) সচিব, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়

(১১) সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

(১২) সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

(১৩) মহাপরিচালক, ভূমি রেকর্ড ও জরীপ অধিদপ্তর ( ১ঌঌ৮ সনে সংশোধিত)

(১৪) চেয়ারম্যান, ভূমি আপিল বোর্ড

(১৫) চেয়ারম্যান, ভূমি সংস্কার বোর্ড

(১৬-২১) ৬টি বিভাগের ৬ জন বিভাগীয় কমিশনার

(২২) বেসরকারী সংস্থা এডাব এর চেয়ারম্যান বা তার ১ জন প্রতিনিধি

(২২-২৩) জাতীয় পর্যায়ের কৃষক সংগঠনের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিক্রমে মাননীয় ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত দুইজন প্রতিনিধি ৷

সদস্য-সচিব

(২৪) যুগ্ম-সচিব (প্রশাসন), ভূমি মন্ত্রণালয়

(খ) জাতীয় কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির কার্যপরিধি

এই কমিটি দেশব্যাপী কৃষি খাস জমি বরাদ্দ সম্পর্কে নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন ৷

এই কমিটি দেশব্যাপী কৃষি খাস জমি বরাদ্দ ও ব্যবস্থাপনার অগ্রগতি মূল্যায়ন করবেন ৷

কৃষি খাস জমি চিহ্নিত ও বরাদ্দ সংক্রান্ত বিভিন্ন অঞ্চলে উদ্ভুত সমস্যা সমাধানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন ৷

এই কমিটি প্রতি তিন মাসে কমপক্ষে একবার বৈঠকে মিলিত হবেন ৷

জেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির গঠন ও কার্যপরিধি:

(১৯৯৮ সনে ১৫ই সেপ্টেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত সংশোধনী মতে)

আহবায়ক

(১) জেলা প্রশাসক

সদস্যবৃন্দ

(২) পুলিশ সুপার

(৩) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)

(৪) সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় বন কমকর্তা

(৫) জেলা কৃষি কর্মকর্তা

(৬) জেলা কৃষক সংগঠনের দুজন প্রতিনিধি (ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত)

(৭) জেলা কৃষক সমবায় সংগঠনের একজন প্রতিনিধি (ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত)

(৮) ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত বেসরকারী সংস্থা এডাব এর একজন প্রতিনিধি কিংবা জেলায় কর্মরত যে কোন বেসরকারী সংস্থার একজন প্রতিনিধি

(৯) জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি (মাননীয় ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত)

সদস্য -সচিব

(১০) রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর

ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত একজন সংসদ সদস্য এই কমিটির উপদেষ্টা থাকবেন ৷ তাছাড়া জেলা কমিটি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ইউ,পি, চেয়ারম্যানকে উক্ত কমিটিতে সংযুক্ত করতে পারবেন ৷

জেলা কমিটিতে আলোচনার সময় সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাহী অফিসার ও জেলা পর্যায়ের সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা সদস্য হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হবে ।

জেলা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির কার্যপরিধি:

জেলা কৃষি খাস জমি বরাদ্দ কর্মসূচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিধিমালা প্রচার ৷

থানা কৃষি খাস জমি বরাদ্দ কর্মসূচী অনুযায়ী ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাস জমি বন্টনের প্রস্তাব অনুমোদন ও থানা কমিটির কার্যক্রম পর্যালোচনা ও তদারকী ৷

ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাস জমি সংক্রান্ত অনিয়ম সম্পর্কে সরেজমিন তদন্ত ক্রমে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ ৷

কমিটি প্রতিমাসে একবার বৈঠকে মিলিত হবেন এবং জেলার ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিমাসে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন ৷

থানা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির গঠন:

(১৯৯৮ সনে ১৫ সেপ্টেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত সংশোধনী মতে)।

চেয়ারম্যান

(১) থানা নির্বাহী কর্মকর্তা

সদস্যবৃন্দ

(২) থানা কৃষি কর্মকর্তা

(৩) ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা

(৪) থানা সমবায় কর্মকর্তা

(৫) বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ অফিসার

(৬) ইউ, পি, চেয়ারম্যান (সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জন্য)

(৭) বিত্তহীন সমবায় সমিতির ১ জন প্রতিনিধি (জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত)

(৮) থানা কৃষক সংগঠনের একজন প্রতিনিধি (ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত)

(৯) স্থানীয় সত্‌, নিষ্ঠাবান ও জনহিতকর কার্যে উত্সাহী একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি

(জেলা প্রশাসক, সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যদের পরামর্শক্রমে মনোনয়ন দিবেন)

(১০) স্থানীয় কলেজ কিংবা হাইস্কুলের প্রধান একজন (জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যের সহিত পরামর্শক্রমে মনোনয়ন দিবেন)

(১১) এডাব বা এডাব কর্তৃক সুপারিশকৃত স্থানীয় এনজিও প্রতিনিধি একজন

(১২) থানা মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি (ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত)

(১৩) এই কমিটিতে থানা সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা, টিসিসি এ চেয়ারম্যান এবং একজন মহিলা প্রতিনিধিকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হলো। মহিলা প্রতিনিধি এই কমিটি কর্তৃক মনোনীত হবেন।

(১৪) সহকারী কমিশনার (ভূমি)-সদস্য সচিব।

তাছাড়া, সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য ও ভবিষ্যতে থানা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচন হইলে নির্বাচিত চেয়ারম্যান উক্ত কমিটির উপদেষ্টা থাকবেন। এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ্য যে, একাধিক থানা নিয়ে গঠিত প্রশাসনিক ইউনিটের ক্ষেত্রে প্রতিটি থানায় উপরোক্ত মতে পৃথক পৃথক কমিটি গঠিত হবে। তবে এই ক্ষেত্রে অফিসিয়াল সদস্যগণ একই থাকবেন, কেবলমাত্র ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এবং বেসরকারী ও মনোনীত সদস্যগণ সংশ্লিষ্ট থানার আওতাধীন হতে হবে।

থানা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির কার্যপরিধি:

থানার আওতাধীন এলাকায় কৃষি খাস জমি চিহ্নিতকরণ ও উদ্ধারকরণ।

উদ্ধারকৃত কৃষি খাস জমিকে নীতিমালা অনুযায়ী বন্দোবস্ত প্রদানের সুবিধার্থে প্লট বিভক্তিকরণ।

সরকারের কৃষি খাস জমি বরাদ্দ কর্মসূচী সম্পর্কে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ।

ভূমিহীনদের নিকট হতে দরখাস্ত আহবান এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি)এর মাধ্যমে দরখাস্ত গ্রহণ।

প্রাপ্ত দরখাস্ত বাছাই এবং নীতিমালা অনুযায়ী ভূমিহীনদের অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন।

নির্বাচিত ভূমিহীনদের জন্য খাস প্লট বরাদ্দ দেওয়া সম্পর্কে সুপারিশ প্রদান।

বন্দোবস্তপ্রাপ্ত ভূমিহীনকে দখল প্রদান নিশ্চিতকরণ।

বন্দোবস্ত গ্রহীতা প্রাপ্ত জমি যথাযথভাবে ব্যবহার করছে কিনা, কেহ বন্দোবস্ত শর্তাবলী সঠিকভাবে প্রতিপালন করছে কিনা সে সম্পর্কে তদারকী ও শর্তভঙ্গ করলে জেলা প্রশাসকের নিকট বিধিগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা।

সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য সকল দায়িত্ব প্রতিপালন।

ভূমিহীন পরিবারের অগ্রাধিকার তালিকা

(১৯৯৮ সনের সংশোধনী মতে)

দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ৷

নদী ভাংগা পরিবার (যার সকল জমি ভেঙ্গে গিয়েছে)

সক্ষমপুত্রসহ বিধবা বা স্বামী পরিত্যাক্তা পরিবার ৷

কৃষি জমিহীন ও বসতবাটিহীন পরিবার

অধিগ্রহণের ফলে ভূমিহীন হয়ে পড়েছে এমন পরিবার ৷

১০ শতাংশ বসতবাটি আছে কিন্তু কৃষিযোগ্য জমি নেই এমন কৃষি নির্ভর পরিবার

এই নীতিমালা জারীর এক মাসের মধ্যে জাতীয় কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটি গঠন করতে হবে৷ ভূমি মন্ত্রণালয় এ কার্যক্রম গ্রহণ করবেন ৷

নীতিমালা জারীর এক মাসের মধ্যে জেলা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি গঠন করতে হবে ৷ এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবেন ৷

এই নীতিমালা জারীর এক মাসের মধ্যে থানা কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি গঠন করতে হবে ৷ এই ব্যাপারে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন ৷

ভূমিহীনদের নিকট থেকে কিভাবে দরখাস্ত আহবান করতে হবে?

জেলা প্রশাসক যুগল ছবি(স্বামী ও স্ত্রী একসাথে তোলা ছবি) গ্রহনের জন্য জেলাধীন সকল উপজেলার মৌজাওয়ারী দরখাস্ত আহবানের জন্য একটি সময়সূচী নির্ধারণ করে দেবেন ৷

দরখাস্ত জমা দেওয়ার জন্য কমপক্ষে এক মাস সর্বোচ্চ দুই মাস সময় দিতে হবে ৷ প্রতিটি দরখাস্তের সাথে পরিবার প্রধান (স্বামী স্ত্রী)-এর তিন কপি ফটো দিতে হবে ৷

জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেলা তথ্য অফিসার জেলার বড় বড় হাট/বাজারে লোক সমাগমের দিনে ব্যাপকভাবে মাইকযোগে প্রচারের ব্যবস্থা করবে ৷

উপজেলার সকল বাজারের ইজারাদার এবং ইউনিয়নের দফাদার, মহাল্লাদারগণের দ্বারা বিজ্ঞপ্তিটি ঢোল শহরতের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে এবং তাহাদের নিকট থেকে তামিল রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে ৷

উপজেলার সকল অফিস, রাজস্ব অফিস, থানা, ইউনিয়ন, তহশীল ইত্যাদি সকল অফিসের নোটিশ বোর্ডে বিজ্ঞপ্তি টানাতে হবে৷ বিভিন্ন সভা সমিতিতে এ সম্পর্কে জানাতে হবে ৷ উপজেলার মাসিক সভায় আলোচনার জন্য এই প্রচার কার্যক্রমকে আলোচ্য সূচীভূক্ত করতে হবে ৷

দরখাস্ত একটি নির্ধারিত ফরমে করতে হবে৷ ফর্মের নমুনা সংযোজনী-৬ এ দেয়া হলো৷ উপজেলা থেকে মুদ্রণ করে এই ফরম বিলি করতে হবে৷ মুদ্রণ ব্যয় বাবদ উপজেলা পরিষদ ইচ্ছে করলে প্রতিটি ফরমের জন্য ১.০০ (এক টাকা) হারে মুল্য আদায় করতে পারেন৷ সকল তথ্য সম্বলিত হাতে লেখা দরখাস্তও গ্রহণ করা হবে ৷

উপজেলার সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও ছাত্রদের উপজেলা পরিষদ থেকে পত্র দিয়ে দরখাস্ত সমূহ পূরণে ভূমিহীনদের সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানাতে হবে৷ ইহা প্রচারনার একটি অংশ হিসাবেও বিবেচিত হবে ৷

দরখাস্ত জমা গ্রহণ ও বাছাই পদ্ধতি:

নির্ধারিত ফরমে দরখাস্তসমূহ উপজেলা রাজস্ব কর্মকর্তা গ্রহণ করবেন ৷ গ্রহণের সাথে সাথে তিনি তারিখ ও সময় উল্লেখ করে একটি প্রাপ্তি স্বীকার রশীদ দেবেন ৷ এই রশিদের সম্ভাব্য কত তারিখে এবং কোথায় নির্বাচনের জন্য হাজির হতে হবে তা উল্লেখ করতে হবে ৷ এই রশীদ মুদ্রিত সিরিয়াল নম্বর ও দ্বিতীয় কার্বন কপি সহ বই আকারে হবে৷ জেলা প্রশাসক এই রশিদ মুদ্রণ করে দেবেন ৷

দরখাস্ত দাখিলের নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে প্রাপ্ত দরখাস্তসমূহ বিবেচনার জন্য নির্ধারিত তারিখের পরবর্তী অফিস দিনে উপজেলা ভূমি সংস্কার কমিটি একটি প্রাথমিক সভায় বসবে ৷

প্রাপ্ত দরখাস্ত সমূহকে নীতিমালার আলোকে সজ্জিতকরণ এবং সম্ভাব্য অগ্রাধিকার তালিকার একটি খসড়া এই সভায় প্রণয়ন করতে হবে৷ এজন্য সংযোজনী-৫ এ প্রদত্ত ছক ব্যবহার করতে হবে ৷

অসম্পূর্ণ দরখাস্ত এবং সংশ্লিষ্ট অজ্ঞাত ব্যক্তিসহ কমিটির বিবেচনার অযোগ্য ব্যক্তিদের দরখাস্ত এই সভায় বাতিল করা যাবে৷ পিতার জমি থাকলে কোন ছেলে, কর্মক্ষম পুরুষহীন কোন পরিবার, সক্ষম পুত্রহীন বিধবা যিনি নিজে ক্ষেত মজুর নন এমন একটি ব্যক্তি ও পরিবার খাস কৃষি জমি পাওয়ার উপযুক্ত বিবেচিত হবেন না ৷

সভায় কার্যবিবরণী প্রস্তুত করতে হবে এবং নির্বাচিত এবং বাতিলকৃত আবেদনকারীদের পৃথক তালিকা প্রস্তুত করে উপস্থিত সকল সদস্যদের সম্মতি ও দস্তখত গ্রহণ করতে হবে এবং ঐ দিনই বাতিল ও গৃহীত আবেদনপত্রগুলির তালিকা নির্বাহী অফিসারের নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে ৷

কমিটির সকল সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত হওয়া বাঞ্জনীয় ৷ তবে কোন ক্ষেত্রে দ্বিমত দেখা গেলে সভাপতি বাদে উপস্থিত সকল অফিসিয়াল, নন-অফিসিয়াল সদস্যদের প্রত্যক্ষ সংখ্যাগরিষ্ট ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে৷ উভয় পক্ষে সমান সংখ্যক ভোট পড়লে নির্বাহী অফিসার নির্ণায়ক (কাস্টিং) ভোট দেবেন ৷

মৌজাওয়ারী যোগ্য ভূমিহীনদের অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়নের প্রকাশ্য সভা:

প্রাথমিক সভার পরে ভূমিহীনদের যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য সম্ভব হলে প্রতিটি মৌজায়, এবং তা না হলে প্রতিটি ইউনিয়নের একটি প্রকাশ্য স্থানে উপজেলা ভূমি বন্টন কমিটির একটি বিশেষ সভা হবে ৷

এই সভার তারিখ নির্ধারণ এবং যাবতীয় প্রচারের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৷ যেখানে সম্ভব সেখানে তিনি জনসংযোগ বিভাগের সহায়তা নেবেন ৷ নির্বাহী অফিসার আবশ্যিকভাবে এলাকায় সংসদ সদস্য ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে এই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন ৷ সভায় উপস্থিত জ্যেষ্ঠ জনপ্রতিনিধি এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধিকে এই সভায় যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি করা যাবে৷ উপজেলা ভূমি সংস্কার কমিটির সভাপতিই এই সভায় সভাপতিত্ব করবেন ৷

সভার প্রারম্ভে সরকারের ভূমি সংস্কার অভিযানের উদ্দেশ্য এবং খাস জমি বন্টনের সামাজিক সুফলাদি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করে জনগণের সহযোগিতা কামনা করতে হবে ৷

কমিটির প্রাথমিক সভায় নির্বাচিত মৌজাওয়ারী খসড়া অগ্রাধিকার তালিকা থেকে একজন করে ভূমিহীন পরিবারের প্রধানকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য যোগ্যতা ও অগ্রপ্রাপ্যতা সাব্যস্ত করতে হবে ৷

এই সভায় নির্বাহী অফিসার উপস্থিত চেয়ারম্যান,ওয়ার্ড মেম্বারদের সনাক্তির ভিত্তিতে আবেদনকারীদের দরখাস্তের সাথে প্রদত্ত ছবি সত্যায়িত করে নেবেন এবং ছবির অপর পিঠে প্রত্যয়ন স্বাক্ষর দেবেন ৷ প্রত্যয়িত ছবির কপি কবুলিয়ত ফরমে এবং ১ কপি পুনর্বাসন কার্ডের সাথে যুক্ত হবে ৷

উপজেলার সর্বত্র (প্রতি ইউনিয়ন কমপক্ষে একবার) এভাবে সকল আবেদনকারীদের সরেজমিনে পরীক্ষার পর বাতিলকৃত দরখাস্তসমূহ বাদে অবশিষ্ট দরখাস্তে ক্রমিক নম্বর সমম্বয় করে চূড়ান্ত অগ্রাধিকার তালিক প্রণযন করতে হবে৷ উপজেলা সদরের সকল অফিস, ইউনিয়ন, তহশীল অফিস ও থানায় অগ্রাধিকার তালিকা টানিয়ে বিরুদ্ধে কারো কোন অভিযোগ থাকলে তা পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিল করতে বলা হবে ৷ জেলা প্রশাসকের কাছে তালিকায় মুদ্রিত পরিবারদের ভূমিহীন হিসাবে যোগ্যতা এবং অগ্রগণ্য তালিকায় অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন করা ছাড়া তালিকা প্রস্তুতের বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না ৷ এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত ৷

প্রকাশিত এই চূড়ান্ত তালিকায় সুস্পষ্ট ভাবে ইহা উল্লেখ করতে হবে যে, অগ্রপ্রাপ্য তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তি কোন ক্রমেই জমি প্রদানের কোন প্রকার নিশ্চয়তা বহন করবে না ৷ জমি বন্টনের সময় অগ্রপাপ্য তালিকার সাথে ভূমিহীনদের বাসস্থান, খাস জমির অবস্থান এবং বর্তমান দখল অবস্থাও কমিটির সভায় বিবেচনা করা হবে ৷

উপরোক্ত সকল পর্যায়ের জন্য জেলা প্রশাসক তার সুবিধামত সর্বশেষ সময়সীমা বেধে একটি গণ-বিজ্ঞপ্তি দেবেন৷ এজন্য সংযোজনী-৭ এর ছকটি ব্যবহার করা যেতে পারে ৷

ভূমিহীন নির্ণয় ও তালিকা প্রণয়নে সতর্কতা

ভূমিহীনদের নির্বাচন এবং তালিকা প্রণয়নে সর্বাধিক সতর্কতা ও কঠোর নিরপেক্ষতা অবলম্বন করতে হবে ৷

ভূমিহীনদের তালিকা প্রণয়নে কোন কারচুপি বা অসত্‍ উদ্দেশ্যের অভিযোগ পাওয়া গেলে জেলা প্রশাসক তত্ক্ষনাত্‍ একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে তদন্তের জন্য নিয়োগ করবেন ৷

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকগণ এই ধরনের তদন্ত কাজের জন্য নির্দেশ পাওয়ার পর সাত দিনের বেশী সময় নিবেন না ৷

তদন্তে কারো বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণিত হলে, জেলা প্রশাসক তার সুবিবেচনা বিভাগীয় মামলা অথবা উভয় মামলা রুজু করার নির্দেশ দেবেন এবং প্রয়োজনীয় কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন ৷

কোন ভূমিহীন পরিবারকে কোন প্লট দেয়া হবে তা নির্ধারণ প্রক্রিয়া

ভূমিহীন বাছাই প্রক্রিয়াগুলি সম্পন্ন হবার পরে প্রতিটি মৌজার প্রাপ্ত খাস কৃষি জমির একটি প্লট করা তালিকা এবং যোগ্য ভূমিহীনদের একটি অগ্রাধিকার তালিকা প্রণীত হবে ৷ উপজেলা ভূমি সংস্কার কমিটি এভাবে ভূমিহীনদের অগ্রাধিকার নাম অনুসারে প্রাপ্ত জমি ভূমিহীনদের মধ্যে বন্টনের সুপারিশ প্রণয়ন করবেন ৷ এই সুপারিশও সর্বসম্মত হওয়া বাঞ্চনীয় ৷ মত বিরোধ দেখা দিলে পূর্বে বর্ণিত কাস্টিং ভোটের প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হবে ৷

প্রণীত ভূমিহীনদের তালিকায় চিহ্নিত কোনো ভূমিহীন বৈধভাবে যদি কোনো খাস কৃষি জমির দখলে থাকে তাহলে বরাদ্দের ব্যাপারে সেই ভূমিহীন অগ্রাধিকার পারে ৷

যে এলাকার জমি বন্দোবস্ত দেয়া হবে সেই এলাকার ভূমিহীন পরিবার অগ্রাধিকার পাবে৷ অর্থাত্‍ যে মৌজার জমি বন্দোবস্ত দেয়া হবে সেই মৌজার তালিকাভূক্ত ভূমিহীনদের দাবীই অগ্রগণ্য হবে ৷

জমি বরাদ্দের সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে জমি প্রাপ্ত পরিবারের প্রাপ্য জমির পরিমাণ যেন নিজ সম্পত্তিসহ সাকুল্য ২.০০ একরের বেশী না হয় ৷

যেখানে মনোনীত এনজিও এবং অন্যান্য সরকারী, আধা সরকারী এবং স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা কর্তৃক সংগঠিত ভূমিহীন সমিতি বা দল আছে, সেখানকার প্রাপ্ত খাস জমি, ভূমিহীন সমিতির সদস্যদের মধ্যে, যদি তারা অন্যান্য বিবেচনায় প্রাপ্তিযোগ্য বলে বিবেচিত হন তবে অগ্রাধিকার পাবে ৷

যদি উপরোক্ত অগ্রাধিকার রক্ষা করতে গিয়ে প্রণীত তালিকার অগ্রপ্রাপ্যতা ভঙ্গ করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে কমিটির সভায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ভঙ্গ করা যাবে ৷ তবে এ ক্ষেত্রে কার্য্য বিবরণীতে বিশেষ কারণটি বিস্তারিত লিখতে হবে৷ প্রণীত অগ্রাধিকার তালিকায় মন্তব্য কলামে কার্য্য বিবরণীর অনুচ্ছেদ নম্বর লিখে রাখতে হবে ৷ নির্বাচনের দিনেই উপজেলা পরিষদ নোটিশ বোর্ডের মাধ্যমে নির্বাচিত ভূমিহীনদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং যথাসম্ভব দ্রুত সভার কার্য্য বিবরণী প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসককে অবহিত করতে হবে ৷

কমিটির সিদ্ধান্তে কেউ সংক্ষুদ্ধ হলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে শুধুমাত্র নিম্নোক্ত দুইটি কারণে আপিল করতে পারবে:

(ক) আবেদনকারীর অগ্রাধিকার লংঘন করে অন্যকে খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে ৷

(খ) আবেদনকারী একজন তালিকাভুক্ত ভূমিহীন এবং তাহার বৈধ দখলীয় আবাদী খাস জমি অপরকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়েছে ৷

উল্লেখ্য যে, খাস জমির স্বত্ব বা নির্বাচিত ভূমিহীনের বৈধতা নিয়ে এই পর্যায়ে কোন আপীল করা যাবে না ৷

সংশ্লিষ্ট আপীলের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের রায়ই হবে চূড়ান্ত ৷

বন্দোবস্তের সিদ্ধান্ত পরবতী কার্যক্রম

জেলা প্রশাসক কর্তৃক মামলাটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরে উহা সংশ্লিষ্ট উপজেলায় ফেরত পাঠাতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ভূমিহীনকে অনুলিপি যোগে তার পরবতী করণীয় সম্পর্কে জানিয়ে দিতে হবে ৷

ভূমিহীন পরিবার প্রধান ঐ অবগতি পত্র পেয়ে প্রতি একর বা তার অংশের জন্য ১.০০(এক টাকা) হারে সেলামী ও চলতি বত্সরের খাজনা ডি,সি,আরের মাধ্যমে তহশীল অফিসে জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করবে ৷

উক্ত রশিদ এবং জেলা প্রশাসকের অনুমোদনের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিস থেকে একসেট মুদ্রিত কবুলিয়ত ফরম (সংযোজনী ৮) পূরণ করতে হবে ৷ এর একটি সেটে ৪টি কপি থাকবে ৷ মূল কপিটি কবুলিয়ত সম্পাদনকারীর জন্য, ২য় কপি থাকবে কেইস রেকর্ডের সাথে, তৃতীয় কপি থাকবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে, ৪র্থ কপি থাকবে রেজিষ্ট্রি অফিসে ৷ এই কবুলিয়ত ফরম জেলা প্রশাসক মুদ্রণ করে দেবেন ৷

সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক বরাবরে এই কবুলিয়ত দিতে হবে ৷ কবুলিয়তের মূল কপিতে প্রয়োজনীয় ননজুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্প লাগাতে হবে ৷

উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করে কখন, কোথায়, কিভাবে বন্দোবস্তি প্রাপ্ত ভূমিহীন দম্পত্তিকে উপস্থিত করে কবুলিয়ত সম্পাদন করা হবে তা স্থির করবেন এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন ৷

সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক সম্পাদিত কবুলিয়ত গ্রহণ করবেন এবং নির্বাচিত জমি বন্দোবস্ত দেবেন৷ তিনি কবুলিয়ত ফরমের নির্ধারিত স্থানে স্বাক্ষর দান করবেন ৷

বন্দোবস্ত দেওয়া জমি কোনক্রমেই বিক্রয় বা হস্তান্তর করা যাবে না তবে উত্তরাধিকারীদের নাম পরিবরর্তন করা যাবে ৷ এই বন্দোবস্তের মেয়াদ হবে ৯৯ বছর।

জেলা প্রশাসক কর্তৃক কবুলিয়ত গ্রহণের পরে সংশ্লষ্ট রেজিষ্ট্রি অফিসে উহা রেজিষ্ট্রি করতে হবে ৷ এই কবুলিয়ত রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোন রেজিষ্ট্রেশন ফিস এর প্রয়োজন হবে না ৷

ভূমিহীনদের কাছে বন্দোবস্ত দেওয়া জমি ও পরিবারের একটি বিবরণী উপজেলা রাজস্ব কর্মকর্তা কর্তৃক সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে পাঠাতে হবে ৷ সাব-রেজিষ্ট্রার একটি পৃথক নথি খুলে এই অবগতি পত্রসমূহ ভবিষ্যত রেফারেন্স এর জন্য একত্র করে রাখবেন এবং একটি স্থায়ী রেজিষ্টারে এই সব তথ্য লিপিবদ্ধ করে রাখবেন ৷ দলিল রেজিষ্ট্রির সময়, এই সকল জমি যাতে বিক্রয় না হয় সেই দিকে সাব- রেজিষ্ট্রার বিশেষ দৃষ্টি রাখবেন ৷

বাছাইকৃত ভূমিহীন এর কেইস অনুমোদন এবং রেকর্ড প্রণয়ণের কাজগুলি সম্পাদন করার জন্য ভূমিহীনকে যাতে হয়রানী হতে না হয়, সে জন্য এ সকল কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার তহশিলদারকে দায়িত্ব দিতে হবে ৷

জেলা প্রশাসক সারা মাসে তার অধীনস্থ জেলায় যত ভূমিহীনকে জমি দেওয়া হলো তাদের নাম সম্বলিত তালিকার তিনটি কপি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রতি বাংলা মাসের ১ তারিখে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবেন ৷ মন্ত্রণালয় হতে এইগুলো জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশের ব্যবস্থা করা হবে ৷ এই জন্য সংযোজনী ১০ ছকে ব্যবহৃত হবে ৷

পত্রিকায় তালিকা প্রকাশের পরে ৩০ দিনের মধ্যে ভূমিহীনদের যোগ্যতার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করা যাবে ৷

বন্দোবস্ত প্রাপ্ত ব্যক্তি ভূমিহীন নয় প্রমাণিত হলে প্রদেয় বন্দোবস্ত বাতিল ঘোষণা করতে হবে এবং ঘটানোর জন্য দায়ী ব্যক্তি বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে ৷

জেলা প্রশাসকের বিশেষ ক্ষমতা

জেলা প্রশাসক স্বেচ্ছায় অথবা কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে যে কোনো সময় সংশ্লিষ্ট নথিতে কারণ লিপিবদ্ধ করে যে কোনো বন্দোবস্ত বাতিল করতে পারবেন ৷

জেলা প্রশাসকের রায়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আপিল করা যাবে ৷ বিভাগীয় কমিশনারের সিদ্ধান্ত হবে চূড়ান্ত ৷

এই আদেশে জেলা প্রশাসকের উপর প্রদত্ত সকল ক্ষমতা ও দায়িত্বে নিম্নোক্ত কয়টি ক্ষেত্র ছাড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এর প্রতিও প্রদত্ত হয়েছে বলে গণ্য করা হবে:

(ক) প্রদেয় বন্দোবস্ত বাতিল এবং

(খ) উচ্ছেদ করণের আদেশ প্রদান ৷

মিউটেশন প্রক্রিয়া

উপজেলা (রাজস্ব) কর্মকর্তা সম্পাদিত কবুলিয়ত এর কপি পাওয়ার পর তিনি তার ভিত্তিতে একটি নামজারী কেইস সৃজন/সৃষ্টি করবেন এবং ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে এই বন্দোবস্তকৃত জমিকে ১০ নম্বর রেজিষ্টারভুক্ত করবেন ৷

খতিয়ানের মন্তব্য কলামে এই জমি উত্তরাধিকার সূত্র ব্যতিত হস্তান্তরযোগ্য নয়,কথাগুলি লিপিবদ্ধ করতে হবে ৷

রেকর্ড সংশোধন করে সংযোজনী-৯ এর ছকে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ভূমিহীন ও তহশীলদারকে জানিয়ে দিতে হবে ৷

অনুমোদিত সকল কেইস রেকর্ড উপজেলা রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট থাকবে ৷ মামলার ক্রমিক নম্বর অনুসারে রেকর্ডগুলি সংরক্ষণ করতে হবে ৷ রেকর্ড বা রেকর্ডের অংশ হারানো বা মিস ফাইল হওয়ার জন্য উপজেলা রাজস্ব কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন ৷

দলিল হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক সভা

মহামান্য রাষ্ট্রপতি দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে ভূমিহীনদের মধ্যে নিজে খাস জমি বিতরণের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ৷ মহামান্য রাষ্ট্রপতি সময় দিতে না পারলে সে সকল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে মন্ত্রি পরিষদের সদস্যবর্গ, সংসদ সদস্যবর্গ, সচিব, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা চেয়ারম্যানকে আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে ৷ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক প্রয়োজনীয় যোগাযোগ করবেন ৷ সকল মনোনীত ভূমিহীন নিজে উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির নিকট থেকে জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র গ্রহণ করবেন ৷

জমিতে সরেজমিন দখলের সাথে উপরোক্ত অনুষ্ঠানের কোনো যোগাযোগ থাকবে না ৷ কবুলিয়ত সম্পাদনের পরেই উপজেলা কমিটির সদস্যগণ সরেজমিনে গিয়ে সংশ্লিষ্ট তহশীলদারের উপস্থিতিতে ঢোল শহরতের মাধ্যমে ভূমিহীনকে জমির দখল বুঝিয়ে দেবেন এবং হস্তান্তর রশীদ গ্রহণ করবেন ৷ এই রশীদে উপস্থিত সদস্যগণ সাক্ষ্য হিসাবে সই করবেন এবং এটি কেইস রেকর্ডের অন্তর্ভূক্ত হবে ৷ এই দখল প্রদানের সময় ভূমিহীনদের জমির সীমানা চিহ্নিত করে দিতে হবে এবং প্রত্যেক প্রাপক কর্তৃক সীমানা চিহ্ন পুতে নিতে হবে ৷

(১৯৯৮ সনে ১৫ সেপ্টেম্বরের গেজেটে প্রকাশিত খাস জমি বন্দোবস্ত নীতিমালার সংশোধনী মতে)