১. সীমাবদ্ধতা
মানুষেরা বোকা হয়
ঈশ্বর বলেছেন তুমি সেরা
সেই অহংকারে সবকিছু ভুলে যায়
আমৃত্যু লড়াই শুধু নিজেকে জাহিরের
শরীরের হাড় মাংস ক্ষয় করে ইঁটের গাঁথুনি শক্ত করে
ভুলে যায় মাটির বিছানা।
মানুষেরা বোকা হয়
তাই অন্ধচোখে কিছুই দেখেনা
দেখে না অনাবিল সুখ বাতাসে ভেসে বেড়ায়, দেখে না প্রকৃতি
আহার নিদ্রায় বুদ হয়ে হারিয়ে ফেলে জীবন যৌবন
যিনি আছেন সৃষ্টির আদিতে
তার দেখো মেলে না কোনদিন।
মানুষেরা বোকা হয়
অসীম আকাশে ডানা মেলে উড়তে পারে না
সীমাবদ্ধ চিন্তা আর আত্মঅহমিকায় নিঃশেষ হয়
ছুটে বেড়ায় মরীচীকার খোঁজে
দেখে না অন্তর দেখে না ঘর
মানুষেরা বোকা হয়।
২. বোধ
আনন্দ নিকেতনে ভীষন ব্যস্ত সবাই
ঘর গোছাতে আর ভোজন বিলাসে
কেউ বিশ্বাস করে না জীবন ঠুনকো
আমোদ আহ্লাদ আর ফ্যাশনে মশগুল।
ভুলে যায় আপন পর ভুলে যায় ঈশ^র।
নির্বিবাদে রক্ত ঝরায় রক্তের সম্পর্কে
মন কি বলে সে খোঁজ রাখেনা কোনদিন
বিত্ত বৈভবে নিজেকে শক্তিশালী করে।
অস্ত্রের ঝনঝনানিতে অবারিত উল্লাস
পৃথিবী কত সহ্য করবে আর
অপলক নয়নে পলক পড়ল বুঝি
মুহূর্তে থেমে যেতে পারে জীবনযন্ত্র।
পালানোর পথ নেই কোন
ধরা দিতে হবে তার কাছে
যার হাতে নাটাই তোমার
কুর্নিশ তোমায়, স্বীকার করি তুমিই সব।
৩. ফিরিয়ে দাও প্রাণ
প্রতিদিনই ঝরে যাচ্ছে অসংখ্য প্রাণ
এর জন্য কি প্রস্তুত ছিল পৃথিবী!
হে আমার অনিন্দ্য সুন্দর
ক্ষমা করো আমাদের
বন্ধ করো ধ্বংসযজ্ঞ, মুক্তি দাও পৃথীবীকে।
এত বাতাস চারিদিকে
তবু হৃদয়ের দরজা জানালা বন্ধ
বুকের পাঁজরে পোঁছেনা অক্সিজেন
খুব সজোরে ফুসফুস চেপে ধরেছে যেন
আহ্ কী কষ্ট, তবু নেই প্রিয়জনের স্পর্শ!
হে আমার আলাদীনের দৈত্য
অদৃশ্য যমদূতকে তুলে নাও হাতের মুঠোয়
কথা দিলাম এবার শর্ত পূরণ হবে
পৃথিবীতে একবার বেঁচে গেলে
সব ভুল শুধরে মানুষ হবো।
প্রিয় মুখগুলো ভেসে ওঠে চোখের সামনে
একবার প্রানভরে দেখি
হে আমার অনিন্দ্যসুন্দর
এ যাত্রায় ক্ষমা করে দাও
ফিরিয়ে দাও পৃথিবীর প্রাণ।
৪. বৈশাখ ও সামাজিক দূরত্ব
সারা দিনমান তোমার প্রতীক্ষায়
জানি তুমি আসবেনা
চলছে কঠোর লকডাউন, সামাজিক দূরত্ব
তুমি আসোনি।
লাল পেড়ে সাদা শাড়ি পড়েছি ঠিকই
ছিল না খোঁপায় বেলীর মালা
তুমি আসোনি
তুমি পাঞ্জাবি পড়োনি, সুগন্ধী মাখোনি
এই বৈশাখে তুমি আসোনি।
বর্ষবরণ সংগীতে ছিলনা উৎসবের আমেজ
যেন নিয়ম মেনে সূর্য ওঠা প্রতিদিনের মতো
মঙ্গল আলোক রশ্মি বর্ষিত হয়নি কোথাও
নতুনের উন্মাদনায় বাজেনি ভৈরবী সুর
এই বৈশাখে তুমি আসোনি।
মতামত লিখুন :