Logo

তপন দত্তের কবিতা : এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৩, ২০২০
  • শেয়ার করুন

এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই
—-তপন দত্ত

এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
হুম্ এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
সত্যি সত্যিই- বুকে জোয়ানের হিম্মত রেখে বলছি-
এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই- জন্মান্তরে নয়-
এ জন্মেই মানুষ হবো,হে সুন্দর পৃথিবী আমার।
পাপের পঙ্কিলতায় আর নয়-
ভূমির চেয়েও পাপ ভারি-সে পাপে তোমাকে-
আর ভারাক্রান্ত করতে চাইনা তোমাকে-
হে সুন্দর পৃথিবী আমার।

এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
হরিদাসের টাকাটা ফেরৎ দিয়ে দেবো ঠিক ঠিক।
অনিমেষকে ডেকে এনে ফেরৎ দেবো তার-
পৈতৃক সম্পত্তিটুকুন।
পাশের ভিটেখানিতে- এবার রমাদিকে বেঁধে দেবো-
ষোল-বত্রিশের চৌচালা ঘর।

হুম্ ,এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
মাস্টার মশাইয়ের পায়ে উপর হবো- কাদামাখা পায়ে
দু-চোখের জল ঝরতে দেবো অবিরল টোপ্ টোপ্ টোপ্।
হাতে বেত তুলে দেবো নিজেই- হাত পেতে বলবো-
আমার পাওনাটুকুন আজ- দিন বুঝিয়ে দিন।
কানধরে উঠবস করে ক্ষমা চেয়ে নেবো ঠিক ঠিক।

এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
নির্মম আর পাশবিক নির্যাতনের জন্যে-
তোমার কাছে করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে নেবো হে নারী।
বুক পেতে দেবো- যদি পদাঘাতে প্রতিশোধ নিতে চাও,
নিতে পারো- এবার নাহয় পশুত্বের হোক বলি।
হে নারী,আর-পুরুষ নয়- তুমি-নিদেন পক্ষে-
মানুষ দেখে যাও একবার।

এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
নিখিলেশের ঘরটা পাকা করে দেবো ঠিক-
ওর হাত ধরে সন্তর্পণে বলে আসবো-
হুম্ , তোর টিনকাঠের ঘরটা সেদিন আমিই জ্বালিয়েছিলাম,আমাকে ক্ষমা করিস ভাই।

এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
ঐ স্কুল ঘরটার পাশে-একই সে উঠোনে,একই আঙিনায় গড়ে দিয়ে যাবো মন্দির,মসজিদ,গীর্জা আর প্যাগোডা।
পাশের ঐ ধানক্ষেতটায়- হুম্ ঠিক ঐ খানটায়-
কেটে দিয়ে যাবো বিশাল এক পদ্মপুকুর।
একই জলে পবিত্র হবে- হিন্দু,মুসলমান,ইহুদি,জৈন-
আর বৌদ্ধ, খ্রিস্টান।

হুম্ ,সত্যি সত্যিই বলছি- এ যাত্রায় যদি বেঁচে যাই-
তোমাকে,তোমাদেরকে আর –
মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেবোনা একটিও।
যদি এ যাত্রায় বেঁচেই যাই- জন্মান্তরে নয়-
এ জন্মেই পূতপবিত্র মানুষ হবো এক-
হে সুন্দর পৃথিবী আমার,করে গেলাম দৃঢ় অঙ্গীকার।