Logo

তপন দত্তের কবিতা- তুমি বেঁচে আছো নীলকন্ঠী?

অনিন্দ্য বাংলা
রবিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২০
  • শেয়ার করুন

তুমি বেঁচে আছো নীলকন্ঠী?
তপন দত্ত

নীলকন্ঠী- নীলকন্ঠী- নীলকন্ঠী তুমি বেঁচে আছো-?
তুমি বেঁচে আছো নীলকন্ঠী-?
জানো নীলকন্ঠী- জৌলুষ হারিয়ে আ্যমেরিকা লণ্ডভণ্ড হয়ে গ্যাছে আজ-
ইয়্যুরোপ,মধ্যপ্রাচ্য,উত্তর আ্যমেরিকা,দক্ষিণ- আ্যমেরিকা- সবকটি এখন সমাধি নগরী।
তুমি জানোনা,জানোনা- নীলকন্ঠী- ইটালি,ফ্রান্স,স্পেন,জার্মানি এখন মুখ থুবড়ে পড়ে আছে পৃথিবীর বুকে।
এখন এরা কেবলই ধূসর মানচিত্র।

বছর পূর্ণ হতে আর সাত দিন বাকি-
বিজলিবাতি জ্বলেনা সে অনেকদিন,ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ হলো কতোদিন মনে নেই আজ।
হয়তো ওরা কেউ আর বেঁচে নেই।
মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করতে করতে আমি-
আজো বেঁচে আছি এক ক্ষয়িষ্ণু প্রাণ।
পাশের ফ্ল্যাটের অনিমেষ একটি চ্যানেলে লাইভ নিউজ রিলে করতো রাতভর,কাক ডাকা ভোরে পেয়ছিলাম তার মৃত্যুর খবর।
ডাক্তার মঈন, সে-তো আগেই গেছে,সিনিয়র স্টাফনার্স
শিলাদি- মৃত্যুর আগেও ভেন্টিলেটর নিয়ে দৌড়ে গেছে
পেশেন্টের কাছে-
ও.সি ফারুক আহমেদ হ্যান্ডমাইক হাতে নিয়ে দৌড়িয়েছিলেন দ্বারেদ্বারে- বিনীত কণ্ঠে বলেছিলেন-
প্লিজ আপনারা ঘরে ফিরে যান,আপনারা ঘরে থাকুন।
আমার খুব চেনা এ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার কমলেশ-
ভয়ার্ত শব্দে সাইরেন বাজিয়ে বাজিয়ে ছুটে গেছে হাসপাতালের দিকে-
আজ ওরা কেউ বেঁচে নেই।

আমার শহর ঘন গাঢ় এক বীভৎস অন্ধকারে-
নিমজ্জিত আজ- এখানে প্রাণের কোন স্পন্দন নেই।
কেবলমাত্র আমি জানালার গ্রিল ধরে বসে আছি-
দৃষ্টি বাইরের দিকে- যতোদূর চোখ যায়- শুধুই অন্ধকার
শিয়ালগুলো বেসুরে ডেকে উঠছে বারবার।

মন্দির,মসজিদ,গীর্জার দ্বারে তালা ঝুলছিলো-
হয়তো মানুষগুলো শেষবারের মতো-
প্রার্থনা করতে এসেছিলো- কেউ ফেরেনি ঘরে।
ঘরে যেতে পারেনি কেউ,দেখেছিলাম লাশের মিছিল।
হয়তো বন্ধ কুঠরীতে আমিও-
লাশ হবো আজ না হয় কাল।

তুমি বেঁচে আছো তো- নীলকন্ঠী-?
তোমার বুকের ব্যাথাটা কি কমেনি একটুও-?
এখনো কি তোমার বুকটা ভেঙে উঠে রোজ রোজ-?
নীলকন্ঠী- হাতের মুঠোয় রাখতো ইনহ্যালার-?
নীলকন্ঠী- নীলকন্ঠী- নীলকণ্ঠী তুমি বেঁচে আছোতো-?