Logo

নতুন জীবনের আরেক নাম গনিয়ারি পাতা !

অনিন্দ্য বাংলা
রবিবার, জুলাই ৫, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা : গাছটির নাম গনিয়ারি। কেউ কেউ বলেন গইনারি বা গনিয়ারি গাছ। বাংলাদেশের সুন্দরবন, সিলেট, ভারতের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে গনিয়ারি গাছ প্রচুর পাওয়া যায়। এর নাম সংস্কৃত : গণিকারিকা, অগ্নিমন্থ, বাংলা : ভূতভৈরবী, গণিয়ারী, আন্গান্ত, আন্গান্ত, হিন্দি : অরণী, গণিয়ারী। বৈজ্ঞানিক নাম : Premna integrifolia

সবুজ পাতা দ্বারা আচ্ছাদিত এই গাছ। এই গাছের বাকল বেশ পাতলা এবং ঈষৎ পীতবর্ণ। তবে কাঠের রঙ হয়ে থাকে ফিকে ধূসর। এই গাছের পাতা ৩-৪ ইঞ্চি লম্বা হয়। কিন্তু প্রস্থের দিকে বেশ প্রসারিত হয়। উভয় মিলে পাতা ডিম্বাকৃতি রূপ লাভ করে। তবে এই পাতার শেষভাগের বর্ধিত অংশ একটু সূচালো হয়ে থাকে।

এর পুষ্পদণ্ডে গুচ্ছাকারে ফুল জন্মে। ফুলগুলো আকারে ছোটো ও লোমযুক্ত। ফুলের রঙ ফিকে পীতাভ সবুজ। এছাড়া এর পাতা রান্নায় সগন্ধ আনে। মাছ পচে গেলেও এর পাতা দিয়ে রান্না করলে মাছের দূর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।

আয়ুর্বেদ মতে, এর শিকড়ের স্বাদ তিতা। শিকড়-বাঁটা পাকস্থলীর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, সাধারণ জ্বর নিবারণ করে এবং আমবাত নিরাময়ে সাহায্য করে। এর পাতার রস কৃমি নাশক এবং পেটফাঁপা নিবারক। গোলমরিচের সাথে এর পাতা বেঁটে খেলে সর্দি-জ্বর নিরাময় হয়।

এই গাছের নামকরণ করেছেন ট্যাক্সোনমির জনক কার্ল লিন্নিয়াস ১৭৭১ সালে, যার ৫০ টি প্রজাতি সম্পর্কে জানা যায়। তিনি যে গাছটি থেকে এর নাম নির্ধারণ করেছিলেন তার পাতা ছিল খাঁজকাটা করাতের মতো। কেউ কেউ মনে করেন একারণেই এর নামকরণ হয়েছে ‘প্রেমনা সেরাটিফোলিয়া’ (Premna serratifolia) যার প্রজাতি অংশের অর্থ খাঁজকাটা। তবে গ্রীক ‘প্রেমনা’ অর্থ ‘কাণ্ড’ এবং শিশু অবস্থায় এর পাতা খাঁজকাটা থাকে, সেটাও লক্ষ্যনীয়। এখন দুরকমের পাতার গাছই দেখা যায়। অন্যান্য সমনামের মধ্যে আছে Premna integrifolia, Premna corymbosa ইত্যাদি। Premna latifolia এর বড় পাতাওয়ালা প্রজাতিকে বোঝায়।

কণ্টকময় সবুজ পাতা দ্বারা আচ্ছাদিত এই গাছ। এই গাছের বাকল বেশ পাতলা এবং ঈষৎ পীতবর্ণ। তবে কাঠের রঙ হয়ে থাকে ফিকে ধূসর। এই গাছের পাতা ৩-৪ ইঞ্চি লম্বা হয়। কিন্তু প্রস্থের দিকে বেশ প্রসারিত হয়। উভয় মিলে পাতা ডিম্বাকৃতি রূপ লাভ করে। তবে এই পাতার শেষভাগের বর্ধিত অংশ একটু সূচালো হয়ে থাকে। গাছগুলো লম্বায় সর্বোচ্চ ১২ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে।

এর পুষ্পদণ্ডে গুচ্ছাকারে ফুল জন্মে। ফুলগুলো আকারে ছোটো ও লোমযুক্ত। ফুলের রঙ ফিকে পীতাভ সবুজ। জ্যৈষ্ঠ ও আষাঢ় মাসে ফুল হয়। শ্রাবণ মাসের দিকে ফল ধরে এবং ভাদ্র মাসে ফল পাকে।ফলের আকার .২০ ইঞ্চি হয়। এর বীজের আকার মটর কলাইয়ের মতো।এর পাতা সগন্ধ আনে।
সারা ভারতবর্ষ জুড়ে সন্তান জন্মের পর যাবতীয় জটিলতা নিরসনে প্রসূতিদের জন্য এটি একটি সমাদৃত টনিক। এতে জরায়ূ, ব্লাডার, পিঠব্যথা, স্তনফীতি, দুগ্ধস্বল্পতা, রক্তস্বল্পতা, প্রদর ও আরো অনেক অসুবিধা দূর হয়। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে এবং অরিষ্ট সেবনকালে শিশুরাও মাতৃদুগ্ধ পান করতে পারে। তবে অতিপিপাসা, মুখে ঘা, পেটে জ্বালাপোড়া বা হৃৎপিণ্ডে ব্যথা থাকলে সেব্য নয়।

গণিয়ারী গাছের পাতায় এক ধরনের সুঘ্রাণ থাকে যে-কারণে এটি কখনো কখনো ডালের সঙ্গে যোগ করা হয়। আবার মাছের তৈলাক্ত ভাগ Rancid হয়ে পচা গন্ধ বের হলেও রান্নায় গণিয়ারী পাতা দেয়া হয়। এতে শুধু পচা গন্ধই দূর হয় না, স্বাদে-গন্ধে অসাধারণ হয়ে ওঠে খাবার।

আয়ুর্বেদ মতে, এর শিকড়ের স্বাদ তিতা। শিকড়-বাঁটা পাকস্থলীর ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, সাধারণ জ্বর নিবারণ করে এবং আমবাত নিরাময়ে সাহায্য করে। এর পাতার রস কৃমি নাশক এবং পেটফাঁপা নিবারক। গোলমরিচের সাথে এর পাতা বেঁটে খেলে সর্দি-জ্বর নিরাময় হয়।

কিডনির অসুস্থতার কারণে হাত -পা ফুলে গেলেও প্রতিদিন ৩-৪ চা-চামচ পাতার রস করে খেলে তা দূর হয়, মূত্রস্বল্পতা ও কিডনির অসুবিধাসহ। পাতা খুব ঘন করে জ্বাল দিয়ে পানি চারভাগের একভাগ অবশিষ্ট থাকলে তা জন্ডিস ও পাণ্ডুরোগে ব্যবহার করা যায়। একই ওষুধ দিনে দুবার করে খেলে যাবতীয় ঋতুদোষ নষ্ট করতে পারে। আমাশয়, জন্ডিস, অর্শ, টিউমার, ম্যালেরিয়া, নার্ভের অসুখ, বাত ইত্যাদি রোগেও গণিয়ারী ব্যবহার হয়। এক সময় ঠাণ্ডাজ্বর হলে পাতায় কাঁচামরিচ ঘষে তা খাওয়ানোর টোটকা রীতি ছিল। বাচ্চাদের নিরোগ রাখার জন্যও জলে পাতার রস গুলে গোসল করানো হত।