Logo

বনানী বিশ্বাসের ছোটগল্প : করোনা একটি যুদ্ধ

অনিন্দ্য বাংলা
শনিবার, মে ২, ২০২০
  • শেয়ার করুন

জকের সকালটা অন্যরকম।চারিদিকে সাজ সাজ রব।মেঘমুক্ত আকাশ।মার্চ মাসে গরমের তীব্রতা ততটা বাড়েনা।এমন সুন্দর দিনে সুমির মনটা বড্ড আনচান করে।বুকটা ব্যাঁথায় মোচড় দিয়ে উঠে।অব্যক্ত যন্ত্রণায় তার হৃৎপিন্ড যেন ছিড়ে বের হয়ে আসতে চায়।আজ ২৬ মার্চ। কত অনুষ্ঠান হবে দেশের আনাচে কানাচে।সারি সারি স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা সেজে গুজে যাচ্ছে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে।সুমি ওদের দেখে আর বুকের ভিতর হুহু করে উঠে।তার বুকের ভিতর ছটফট করে উঠে।এ দিনটা আসলে সে আর ঘরে থাকতে পারেনা। সে পাগলের মত ছোটাছুটি করে।ঐ যে বুঝি জয়।তার ছোট্ট শিশু সন্তান ওদের সাথেই বুঝি যাচ্ছে অনুষ্ঠানে।
আজ একটি বছর হয়ে গেল। এখনতো ছেলেটা একটু একটু হাঁটতে শিখেছে।কেমন দেখতে হয়েছে সে জানেনা। তার সন্তান বেঁচে আছে কিনা তাও সে জানেনা। তবে বিশ্বাস করে তার সন্তান বেঁচে আছে। ২৬ মার্চ এলেই সুমি যেন কেমন হয়ে যায়।বাংলাদেশ জন্মের সাথে তার সন্তান জন্মের কি এক বেদনা লুকিয়ে আছে।এ দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। পাক হানাদারদের কবল থেকে বাংলার মুক্তিপাগল দামাল ছেলেরা ছিনিয়ে এনেছিল লাল স্বাধীন পতাকা, স্বাধীন বাংলাদেশ। ২০২০ সালে এই দিনেই তার সন্তান জয়ের জন্ম হয়েছিল।সে আঁনাচে কাঁনাছে সকল জায়গায় তাকে খুঁজছে।কোথায় পাবে তার নারী ছেড়া ধন।ভাবতে ভাবতে সুমি অসুস্থ হয়ে যায়।
ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলার পরাণগঞ্জে সুমির গ্রামের বাড়ি।একই গ্রামে তার শশুরবাড়িও।তার স্বামী একজন স্কুল শিক্ষক।সব মিলিয়ে মধ্যবিত্ত জীবন তাদের।বিয়ের দশ বছরেও সুমির কোন বাচ্চা হয়নি।অনেক ডাক্তার দেখার পরে ও সে মা হতে পারেনি।গ্রামের পরিবেশ বিভিন্নজন বিভিন্ন কথা বলে।ওর খুব খারাপ লাগে।এর প্রভাব পড়ে তার স্বামীর উপরে ও অনেকেই সুমির স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ের কথা বলে।সুমি নিরবে নিভৃতে চোখের জল ফেলে।অনেক ভাবনা চিন্তা করে ওরা আইভিএফ বাচ্চা নেয়ার কথা ভাবে।কিন্তু এই পদ্ধতিতে বাচ্চা নিতে অনেক খরচের ব্যাপার আছে।এত টাকা যোগাড় করা ওদের জন্য খুবই কষ্টের। তারপর ও আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে ওরা ইন্ডিয়া যায়। চেন্নাই এর সিএফসি ফার্টিলিটি সেন্টারে ওরা চিকিৎসা নেয়।পাঁচ মাস গর্ভাবস্থায় সুমি দেশে ফিরে আসে।অপেক্ষা করে অনাগত শিশুর।অনুভব করে সে মা হবে।মাতৃত্ব সকল মেয়েদেরই কাম্য।
সময় গড়িয়ে যায়।সবই ঠিকঠাক চলছে।আটমাস পূর্ণ হওয়ার আগেই হঠাৎ পানি ভেঙে যায়। সুমির আত্মীয় ডাক্তার দাদা তাকে বিএসএমএম ইউতে ভর্তি করিয়ে দেয়।প্রথমে ডাক্তার চেষ্টা করছিল যদি আর একটু সময় পার করা যায়।কিন্তু সম্ভব হলোনা।২৬ মার্চ দুপুর বারোটায় সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সুমির একটা মেয়ে বাচ্চা হয়।জন্মের পর বাচ্চাটির কোন সমস্যা ছিলনা।কিন্তু প্রিম্যচুরড এবং ওজন কম হওয়াতে ডাক্তার বাচ্চাটিকে এনআইসিইউতে ভর্তি করিয়ে দেয়।বিশ্বব্যপি করোনা ভাইরাসের চরম ডামাডোলে বাংলাদেশ ও প্রকম্পিত তখন। সেই যুদ্ধকালীন সময়ে সুমি তার বাচ্চাটিকে নিয়ে এক অসহায় পরিস্থিতিতে পড়ে গেল।একটি প্রচন্ড ভয় ওকে ঘিরে রইল সারাক্ষণ।ওয়ার্ডে সুমি এবং বাচ্চাটি এনআইসিইউতে।সিজারিয়ানের যন্ত্রণা কাতর শরীর, বাচ্চার জন্য প্রচন্ড অস্থিরতা সুমিকে খুব কষ্ট দেয়।এমনকি জন্মের পর সুমি তার বাচ্চাকে একটিবার দেখতে ও পায়নি।
একদিন দুদিন যায় বাচ্চাটিকে তার কাছে নিয়ে আসেনা।তার স্বামী ও আত্মীয় স্বজন বাচ্চাটির খোঁজখবর নেয়।সুমি অস্থির হয়ে যায়। কখন তার সোনামনির মুখটা একটু দেখবে, কখন বুকের ভিতর তাকে জড়িয়ে ধরবে।সন্তান যে কি জিনিস মা না হলে সত্যিই কেউ বোঝেনা।বুকের ভিতরে নিজের সন্তানকে জড়িয়ে রাখবে, এ দিনটির জন্য কত অপেক্ষা সে করেছে।চতুর্থ দিনে ডাক্তার সিদ্ধান্ত দেয় সকাল ন’টায় বাচ্চাটিকে মায়ের কাছে দেবে।নটা বাজে দশটা বাজে বাচ্চাটিকে আর তার মায়ের কাছে দেয়না।ডাক্তার সুমির কাছে থাকা তার আত্মীয়কে ডাকে।ডাক্তার যে কথা বলল তার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিলনা।সকাল ন’টায় যে বাচ্চাটিকে মায়ের কাছে দেয়ার কথা সাড়েদশটায় ডাক্তার জানাল হঠাৎ করেই বাচ্চাটি অসুস্থ হয়ে গেছে।তার অবস্থা খুব খারাপ তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে তাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে।তারা বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে গেল।শুরু হল আর এক জীবন যুদ্ধ।অত ছোট একটা বাচ্চার শরীর থেকে সিরিঞ্জ সিরিঞ্জ রক্ত নেয়া হচ্ছে দেয়া হচ্ছে গাঁদা গাঁদা চেকআপ।সারাদিন একের পর এক চেকআপ ঔষধ।সুমির স্বামী সারাদিন দৌড়ের পর থাকল।সুমিকে জানাতে দিলনা।ঠিক এই সময়ে সুমি ও অসুস্থ হয়ে গেল।তার প্রেসার আর ডায়বেটিস বেড়ে গেল অস্বাভাবিকভাবে।
দুজনের চিকিৎসা চলল।তবে বাচ্চাটির ব্যাপারে কোন ভালো খবর ডাক্তার দিতে পারছেনা।সন্ধ্যায় ডাক্তার সুমির আত্মীয়কে ডেকে কাউন্সেলিং করল এরকম যে আপনাদের বেবির কনডিশন খুব খারাপ তার ব্যাপারে ডাক্তার আশা ছেড়ে দিয়েছে তবে তারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।সুমির আত্মীয় এ কথা কার ও সাথে শেয়ার করলনা।সে হাসপাতালের বারান্দায় একা একা কাঁদে আর ভাবে এ রাতে বাচ্চাটির যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে সে কি করবে।সে তার এক ডাক্তার বন্ধুর সাথে ঘটনাটি শেয়ার করে এবং বলে সে যেন তার পাশে থাকে। চারিদিকে করোনা পরিস্থিতির কারনে কেউ তাদের পাশে আসবে এরকম অবস্থা তখন নাই।বাচ্চাটির এন আইসিউতে চিকিৎসা চলল দিনের পর দিন। একটা সমস্যা ভালো হলে আর একটি নতুন সমস্যা তৈরী হয়।এভাবে চলতে চলতে সাতদিন পরে বাচ্চাটি একটু ভালোর দিকে তখন তার আবার রক্ত লাগবে।কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারনে কে দেবে রক্ত। এমন জটিল পরিস্থিতিতে সুমির আত্মীয় বোনটি রক্ত দেয়।দুদিন পরে আবার রক্ত লাগে আবার আর এক আত্মীয় রক্ত দেয় এভাবে তিন ব্যাগ রক্ত দেয় বাচ্চাটিকে।তখন বিএসএমএমইউতে করোনার চিকিৎসা শুরু হয়েছে।চারিদিকে চাপা আওয়াজ কার কখন করোনা ধরা পড়ে। এ পরিস্থিতে সুমির আত্মীয় বোনটির প্রথম করোনা সনাক্ত হওয়ায় তাকে করোনা চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় আইডিসিআর এ।সুমি এবং তার স্বামী খুব ভয় পেয়ে যায়।কি করবে ওরা ভেবে পায়না।একদিকে সন্তান অসুস্থ তাকে ফেলে চলেতো যাওয়া যায়না।
এ আর এক ভয়ানক দুঃসময়।চারিদিকে অস্থির অবস্থা।প্রতিদন করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে মৃতের হার।দশ বছর পরে অনেক সাধনা করে সুমি মা হয়েছে। আজ কোন এক অদৃশ্য বাঁধনে নিজের সন্তানকে একবার কোলে নিতে পারছেনা।সময়টা যেন থমকে আছে।বিএসএমএমইউর আটতলায় কেবিনের জানলা দিয়ে সুমি দেখে নির্মানাধীন মেট্রোরেলের পিলারগুলি দাড়িয়ে আছে।এ যেন এক মহাকালের স্বাক্ষী।দুঃসময় কাটছেনা কিছুতেই।সরকারে উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে থমকে দিয়েছে এক অদৃশ্য ভাইরাস।শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো পৃথিবীকে এক রাস্তায় এনে দাড় করিয়েছে।বিজ্ঞানীরা হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে, কোন কুলকিনারা করতে পারছেনা।কোথাও আলোর দেখা মিলছেনা। উন্নয়নের চূড়ান্ত শিখরে এসে ও সেই দেশগুলোতে প্রতিদিনে হাজার হাজার মানুষের মত্যু ঘটছে। মত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে নিয়েছ বিভিন্ন পদক্ষেপ। লকডাউন চলছে সারাদেশে।তারপর ও জনগন মানতে চায়না লকডাউন, বুঝতে চায়না লকডাউন।এমন পরিস্থিতিতে সুমি আর তার স্বামী হাসপাতালে দিনের পর দিন থাকছে। বাচ্চা এনআইসিইউতে। চারিদিকের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রভাব হাসপাতালে ও।সে ভাবে তাদের কার ও করোনা হলে আর রক্ষা থাকবেনা।পরিস্থিতি সামাল দেয়া সত্যই খুব কঠিন হয়ে যাবে।কিন্তু বিপদতো কখন ও একা আসেনা।সুমির আত্মীয়কে নেয়া হল আইইডিসিআর এ। হাসপাতালে বসে তার খবর নেয়া আর সম্ভব হলোনা।পরের দিন সুমির স্বামীর জ্বর, কাশি। বুঝতে বাকি রইলনা তাকে ও ধরেছে মরণব্যাধি করোনাতে। বুঝতে পারল কাউকেই ছাড়বেনা এ ছোঁয়াছে ব্যাধি।সুমি কেঁদে ফেলল কি হবে তার সন্তানের?হাসপাতালের কেউ টের পেলে ওদের এ মুহুর্তে হাসপাতাল থেকে বের করে দেবে।সুমির স্বামীর অবস্থা ক্রমাগত খারাপ হতে লাগল।সে ও ভর্তি হল বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে।একদিন যায় দুদিন যায় সুমি আর তার স্বামীর খোঁজ পায়না।এনআইসিইউতে তার বাচ্চার অভিভাবককে খোঁজে কাউকে পায়না।সুমির স্বামীই এনআইসিইউতে যোগাযোগ রাখত।এরই মাঝে সুমি ও আক্রান্ত হয়।পাশের বেডের লোকজন টের পেয়ে যায় সুমির ও করোনা হয়েছে।তারা তাকে এ মুহুর্তে হাসপাতাল ছাড়তে বলে।
এমন ভয়ানক পরিস্থিতি হতে পারে তা তার কল্পনাতেই ছিলনা।তার সন্তানের কি হবে?যার জন্য সে এত যুদ্ধ করল।ভাবতে পারছেনা। সে এনআইসিইউতে গিয়ে বলল আমার সন্তানকে আমার কাছে দিন।ডাক্তাররা তাকে দেখে তার কাছ থেকে সরে গেল।বলল আপনার কাছে বাচ্চা দেয়া যাবেনা তাছাড়া আপনার বাচ্চা এখন ও অসুস্থ, তার চিকিৎসা চলছে। আপনি আপনার কোন গার্জিয়ানকে পাঠান। কাকে পাঠাবে সুমি? তার স্বামী ওতো করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে।এন আইসিইউর ডাক্তার বলল আপনি ও বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু কিভাবে, তার বাচ্চারই কি হবে?তার বাচ্চাতো এখন ও অসুস্থ তাই ডাক্তাররা তাকে দেবেনা।সুমি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে একটা রিকসা নিল।রিকসা ও ঐ হাসপাতালের নাম শুনে তাকে নিতে চায়না। অনেক অনুরোধ করে সে একটা রিকসা নিল।সেখানে সে ও ভর্তি হল।তারপর সুমি আর কিছুই জানেনা।প্রায় এক মাস যমে মানুষে টানাটানি, সুমি সেরে উঠল।কিন্তু সে খুব দুর্বল।তার স্বামী ও সন্তানের কথা মনে পড়ল।সুমি খুব কষ্ট করে আবার বিএসএমএমইউতে আসল।তার স্বামীকে খুঁজল পেলনা।এনআইসিইউতে গেল তার সন্তানকে পেলনা।সে তার শ্বশুড়বাড়িতে ফোন করল।তার দেবর তাকে জানাল তার স্বামী মারা গেছে।
পাগলপ্রায় সুমি কি করবে ভেবে পায়না। সে তার শ্বশুড়বাড়ি আসল।দূর থেকে দেখেই তাকে তারা তাড়িয়ে দিল।তার শাশুড়ি বলল তুই আমার সন্তানকে খেয়েছিস আবার করোনা নিয়ে এসেছিস কিছুতেই আমার বাড়ি ঢুকবিনা।সুমি চলে গেল তার বাবার বাড়ি।না এখানেও ঠাঁই মিললনা।তারা ও বলল তুই করোনা নিয়ে এসেছিস তাই এ বাড়িতে ও তোর জায়গা হবেনা।এত বড় আকাশের নিচে সুমির একটু আশ্রয় নেই।তার সন্তানকে সে খুঁজে পেলনা।তার স্বামীকে নিয়ে গেছে করোনায়।কি হবে তার আর বেঁচে থেকে।সুমি চলে এল ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড়ে।ভাবল এ জীবন সে আর রাখবেনা।সে ঝাঁপ দিল নদীতে। মরণ হলোনা তার। নদীর পারেই ইস্কন মন্দির। ওখান থেকেই এক সন্যাসি দেখে ফেলল এক মা নদীতে নিজেকে বিসর্জন দিচ্ছে।সে দৌড়ে এসে তাকে উদ্ধার করল।এ আর এক যুদ্ধ।সুমি বলল সন্যাসি বাবা আমাকে মরতে দাও।আমাকেতো শ্বশুড়বাড়ি বাবার বাড়ি কেউই আশ্রয় দিলনা তাহলে তুমি কেন আমায় বাঁচালে।সেই থেকে সুমি নদীর পাড়ে ইসাকন মন্দিরের আশ্রমে থাকে।
মানুষের জীবন কতটা ঘটনাবহুল কতটা নাটকাীয় হতে পারে ভেবে পায়না সুমি।এখানে সে বেশ আছে।মন্দিরে অনেকের সাথে থাকে বলে সে তার সন্তানের কথা ভুলে থাকতে পারে কিছু সময়।সে ভাবে একটা সন্তানের জন্য সে কি কষ্টটাই না করেছে। আজ ও জানেনা তার সন্তান বেঁচে আছে কিনা।সুমি আবার ঢাকা আসে সে তার সন্তানকে খোঁজে কিন্তু কেউ বলতে পারেনা তার সন্তানের কথা।করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার কারনে এনআইসিইউগুলো সাময়িক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।তখনকার ডাক্তার নার্স কাউকেই সে পায়না।সুমি ভাবে যদি একবার জানতে পারতাম আমার সন্তান বেঁচে আছে।সুমি শুধু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে এমন পরিস্থিতে যেন কাউকে না পড়তে হয়।এবাবে কি বেঁচে থাকা যায়?,কি অসহ্য অব্যক্ত এক যন্ত্রণাকাতর জীবন। এ জীবন সে আর বইতে পারছেনা।বড্ড ভারী লাগে তার নিজেকে।তারপরও চলছে যেমন নদীর স্রোত বয়ে চলে, যার কোন থামাথামি নেই তেমনি সুমির জীবন ও চলছে এক অমোঘ নিয়মের ভিতর দিয়ে।