Logo

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সাড়ে ১৪ হাজার পরিবার, আরও অবনতির আশঙ্কা

অনিন্দ্য বাংলা
শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: তিন জেলায় বন্যায় এ পর্যন্ত ক্ষতির শিকার হয়েছে সাড়ে ১৪ হাজার পরিবার। সরকারি পরিসংখ্যানে যা ১৪ হাজার ৫৭১। এর মধ্যে তলিয়ে গেছে ১১৫ হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক শ’ বাড়ি, ১৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে একটি মসজিদ।

উজানে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বেড়েই চলেছে নদীর পানি। যমুনা, পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়ছে দ্রুত। আগামী ২৪ ঘণ্টা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে দেশের ১১ জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রাজবাড়ীতে পদ্মার পানি দৌলতদিয়া পয়েন্টের বিপৎসীমার ৬২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এই ইউনিয়নের কাজীপাড়ায় নদী ভাঙনে একটি মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

বগুড়ার বন্যায় দুই উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ৭৯টি গ্রামের সাড়ে ১৪ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুড়িগ্রামের রৌমারি ও রাজিবপুর উপজেলায় মোট ১০০টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাঙ্গাইলের কালিহাতিতে যমুনার ভাঙনে ১২১টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ‘এটি প্রাথমিক পর্যায়ের হিসাব। প্রতিদিনই পরিসংখ্যান পাচ্ছি। উজানে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত। নতুন করেও কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়ার আশঙ্কা করছি।’

এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, গঙ্গা, কুশিয়ারা ও পদ্মার পানি বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টা এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এতে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরিয়তপুরের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তবে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, তুরাগসহ মোট ৮টি নদীর ১৯ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে। এরমধ্যে যমুনার ৯ পয়েন্টে, পদ্মার ৩ পয়েন্টে ও ব্রহ্মপুত্রের ২ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর।

যমুনার মথুরা পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার, আরিচা পয়েন্টে ২৫, ফুলছড়ির ৪৮, সাঘাটার ২৯, বাহাদুরাবাদের ৫৯, সারিয়াকান্দির ৬৩, কাজিপুরের ৫৮, সিরাজগঞ্জের ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।

পদ্মার গোয়ালন্দ পয়েন্টে ৬২ সেন্টিমিটার, ভাগ্যকূলে ১, সুরেশ্বরে ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। ব্রহ্মপুত্রের চিলমারিতে ৪৯ সেন্টিমিটার এবং হাতিয়া পয়েন্টে পানি ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।

আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্টের পানি ৫৫ সেন্টিমিটার, ধলেশ্বরী নদীর এলাসিন পয়েন্টে ৬৪, ঘাঘট নদীর গাইবান্ধা পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে নতুন করে তুরাগ নদীর কালিয়াকৈর পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে বান্দরবন স্টেশনে—১১১ মিলিমিটার। এ ছাড়া কাউনিয়া স্টেশনে ৬৪, ডালিয়ায় ৯২, রংপুরে ৭২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৫৫ এবং চট্টগ্রামে ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

উজানে ভারতের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়িতে—১৮৪ মিলিমিটার। এ ছাড়া তেজপুরে ৬৬ এবং দার্জিলিংয়ে ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।