Logo

বাউল রনেশ ঠাকুরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

অনিন্দ্য বাংলা
বুধবার, মে ২০, ২০২০
  • শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টারঃ সুনামগঞ্জ দিরাই উজালধল গ্রামের বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের শিষ্য রণেশ ঠাকুরের ঘরে অগ্নিসংযোগের তীব্র নিন্দা ও বিচার দাবি করছে  উদীচী ময়মনসিংহ । উদীচী ময়মনসিংহ জেলা সংসদ সাধারণ সম্পাদক যীশুতোষ তালুকদার বলেন এটি নিছক কোন সাধারণ অপরাধের ঘটনা নয়, উদীচী মনে করে এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ, মানবতাবাদী বাঙালি সংস্কৃতির উপর ধারাবাহিক হামলার অংশ। সমাজের কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী বাউলদের চক্ষুশূল হিসেবে দেখেছে, যুগ যুগ ধরে বাংলার পথে প্রান্তরে বাউল শিল্পীরা জাতপাতের ভেদাভেদের বিরুদ্ধে, ধনী-গরীব বৈষম্য এবং শোষণের বিরুদ্ধে, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে গান গেয়ে মানুষকে সজাগ এবং সচেতন করেছেন। তাই তাদের উপর এমন নিন্দনয়ী হামলা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী, সংস্কৃতি-বান্ধব সরকার ক্ষমতাসীন থাকতে কীভাবে একের পর এক বাউলরা নির্যাতিত হয়, এমন প্রশ্নও তোলা হয় ।

গত রোববার (১৭ মে) গভীর রাতে কে বা কারা রনেশ ঠাকুরের গানের ঘরটি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এতে বাউল গানে ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্র ঢোল,বেহালা, দোতারা, একতারা, খঞ্জনি, মন্দিরা, হারমোনিয়ামসহ বেশ কিছু দেশীয় বাদ্যযন্ত্র ও ঘরে সংরক্ষিত মূল্যবান কাঠমাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
বাউল রনেশ ঠাকুর বলেন, রোববার দিনগত রাতে তারা অন্যান্য দিনের মতো রাতের খাবার খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত গভীর হলে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে পারিবারের সদস্যদের ঘুম ভাঙে। পরিবারের সদস্যারা উঠে দেখেন তাদের বাউল গান চর্চার ঘরটি পুড়ে গেছে। পরে প্রতিবেশী ও গ্রামের লোকজনের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

বাউল রনেশ ঠাকুরের মেয়ে জুঁই ঠাকুর বলেন, এটি তার বাবার গানের ঘর। দূরদূরান্ত থেকে আগত বাউল ভক্তবৃন্দ এ ঘরে থেকে বাউল গান শিখতেন। ঘর ও বাদ্যযন্ত্র পুড়ে যাওয়ায় এখন আর বাউল গান শেখানোর কোনো স্থান নেই তাদের বাড়িতে।
বাউল সম্রাট শাহ্ আব্দুল করিমের ছেলে নূর জালাল জানান, রাত প্রায় দেড়টায় চিৎকার শুনে তিনি এগিয়ে গিয়ে দেখি বাউল রনেশ ঠাকুরের আসর ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। রনেশ ঠাকুর কান্নাকাটি করছেন। পরে সবার চেষ্টায় আগুন নেভালেও রনেশ ঠাকুরের প্রায় চল্লিশ বছরের সাধনার সব যন্ত্রপাতি, গানের বই-পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

উদীচীর নেতৃবৃন্দ এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একইসাথে বাউল রনেশ ঠাকুরের পরিবারের নিরাপত্তা বিধানসহ অবিলম্বে তার ঘর পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।