Logo

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের উদ্যোগে মাদ্রাসার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, জানুয়ারি ৭, ২০২১
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক : পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান, পিপিএম-সেবার দিক নির্দেশনা ও নেতৃত্বে  ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের মানবিক কর্মকান্ড অব্যাহত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সদর উপজেলা শম্ভুগঞ্জের মোদারপুর দারুল কোরান নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শতাধিক শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান, ওসি ডিবি শাহ্ কামাল আকন্দ পিপিএম (বার), তদন্ত ওসি ফারুক আহমেদ,সেকেন্ড অফিসার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

 

পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান, পিপিএম-সেবা, ময়মনসিংহে সফলতার এক বছর !
ঠিক একবছর আগে তিনি ময়মনসিংহ জেলা পুলিশে নেতৃত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। দায়িত্ব গ্রহণের কয়েক মাস পর থেকেই সারা পৃথিবীজুড়ে নেমে আসে ভয়াল, প্রাণঘাতি কোভিড ১৯ তথা করোনা ভাইরাস। এর প্রভাব পড়তে শুরু করে গোটা বাংলাদেশে। ময়মনসিংহেও শুরু হয় লক ডাউন, খাদ্য-অর্থনীতি সংকটসহ বহুবিধ সমস্য।
১৭ মার্চ। ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের ভয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিলেন দেশব্যাপী লকডাউন। সবার ঘরে থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ। কেউ বাইরে বেরুবেন না ! ময়মনসিংহ শহরেও শুরু হলো লকডাউন। ঠিক তখনই পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান এর দিক নির্দেশনায় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ নেমে পড়লেন মাঠে । সার্বজনীন সচেতনতা বৃদ্ধি ও বেপরোয়াদের ঘরমুখো করতে হাতে মাইক নিয়ে সরাসরি রাস্তায় নামলেন খোদ পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান। নিজেই শুরু করলেন রাস্তায় রাস্তায় টহল। জনগণকে সচেতন করতে দিনরাত পরিশ্রম করে মানবিকতা ও ভালোবাসা দিয়ে সমৃদ্ধ করলেন জেলা পুলিশের ভাবমূর্তি ও সেবা কার্যক্রম।
করোনা মোকাবিলায় গোটা নগরজুড়ে চষে বেড়ালেন পুলিশ সুপারসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহজাহান মিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়িতা শিল্পী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা শাহ কামাল আকন্দসহ অনেক কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য।
গণসচেতনতায় শুরু করলেন হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, শহরজুড়ে মাইকিং, জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরণ, মাস্ক বিতরণ, হ্যান্ড সেনিটাইজার বিতরণ, পিপিই বিতরণ ও জীবাণুনাশক ট্যানেল স্থাপন।
জেলা পুলিশ দরিদ্র, অসহায় ও ভাসমান মানুষদের জন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চালু করলেন বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র। পাশাপাশি মাইক্রোবাসেও দেয়া হলো ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা এবং বিনামূল্যে ঔষধ-পত্তর। অনেক অসহায় দরিদ্র মানুষ ভ্রাম্যমান চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে সেবা গ্রহণ করেছেন ।
করোনা সচেতনতায় পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান নিজে গান লিখলেন, সুর দিলেন সেটায়। অডিও ভিজুয়াল আকারে গানটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রচার করলেন। এ যেনো জনগণ সচেতন করার অদম্য প্রয়াস।
লকডাউনের স্থবিরতায় শহরজুড়ে দোকানপাট, ব্যবসা বানিজ্য, যানবাহন বন্ধ থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ পড়লো চরম বিপাকে। একবেলা-আধবেলা খাবারও জোটেনি অনেকের। ফলে জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, রাজনৈতিক, সামাজিক বিভিন্ন সংগঠনের পাশাপাশি জেলা পুলিশও ঝাঁপিয়ে পড়লেন কর্মহীন, অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষদের খাদ্য ও অর্থ সহায়তায়।
পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান এর নির্দেশনায় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সারা শহর খুঁজে খুঁজে বের করেছেন দুস্থ, অসহায় অভুক্ত ছিন্নমুল ভবঘুরে মানুষদের। তাদের মুখে তুলে দিয়েছেন নিজেদের রান্না করা খাবার। শিশু- কিশোরদের দিয়েছেন চকলেট, বিস্কুট, খিচুরি ।
খাদ্য সহায়তা, নগদ টাকা ও উপহার পেয়েছেন অনেক এতিম ও পথ শিশু। পরিচ্ছন্ন কর্মী, অসহায় বেদে পরিবার, দরিদ্র বস্তিবাসী, কর্মহীন কুলি, মজুর, বেকার নর-সুন্দর, দর্জি, দরিদ্র সাংবাদিক, হকার, সংস্কৃতিকর্মী, শ্রমিক, মাঝি, মিস্ত্রী। ত্রাণ সহায়তা পেয়েছেন মুদ্রণ শ্রমিক, দৃষ্টি প্রতিবন্দী, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত, ভাসমানসহ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। বাদ যায়নি শারিরীক মানসিক প্রতিবন্ধীরাও তাদের মুখে হাসি ফোটাতে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ ।
যারা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে সংকোচ বোধ করেন, তাদের জন্য জেলা পুলিশ চালু করেছেন হটলাইন। হট লাইনে ফোনের প্রেক্ষিতে রাতের আঁধারে জেলা পুলিশ তাদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন চাল, ডাল, তেল, নুনসহ প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী।
পুলিশ সুপারের অনুপ্রেরণায় ডিসেম্বর ৯৫ ব্যাচ পুলিশ সদস্যরা বর্ষপূর্তি উদযাপন এর অর্থ দিয়ে শতাধিক গরীব মানুষের মাঝে খাদ্য এবং বস্ত্র বিতরণ করেছেন।
পবিত্র রমযান মাসেও থেমে থাকেনি এই সহায়তা কার্যক্রম ! জেলা পুলিশের টীম রাতে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভাসমান অসহায় মানুষদেরকে দিয়েছেন সেহেরীর খাবার। আবার সন্ধ্যা হলেই ইফতার বিলি। ঈদে শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে দিয়েছেন নতুন জামা, ঘুড়ি-নাটাই। বাদ যায়নি বয়স্করাও; নানান পেশার অসহায় মানুষ তাঁরাও পেয়েছেন ঈদ উপহার,খাবার সামগ্রী, শাড়ী-লুঙ্গি।
করোনার ভয়াল দুর্বিসহ পরিস্থিতিতেও থেমে থাকেনি ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের প্রাত্যহিক পুলিশী কার্যক্রম। সুযোগ্য পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামানের সঠিক নেতৃত্ব ও দিক নির্দেশনায় বদলে গেছে ময়মনসিংহ জেলার আইন শৃংখলার সার্বিক পরিস্থিতি। প্রতিনিয়ত টহল ও অভিযান জোরদার করায় ময়মনসিংহ জেলা এখন প্রায় মাদক, সন্ত্রাস ও অপরাধমুক্ত। কমে গেছে চুরি-ছিনতাই।
সর্বোপরি জেলা পুলিশের এমন মহতী কার্যক্রমকে এ অঞ্চলের দরিদ্র, বঞ্চিত অসহায় খেটে খাওয়া মানুষ অনেকদিন মনে রাখবে।
করোনা সংকটে নিজেদের বিপন্ন করে, পরিবার স্বজনদের ছেড়ে জীবন বাজী রেখে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের এই সেবাময় মানবিক কর্মকান্ড বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে মাইল ফলক হয়ে থাকবে আজীবন। জয় হোক পুলিশের, জয় হোক মানবতার। জন-মানুষের ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ পুলিশ।
ময়মনসিংহে এসব সুঘটনার নেপথ্যে নেতৃত্বদানকারী মানুষটি হলেন আমাদের প্রিয় পুলিশ সুপার মোহাঃ আহমার উজ্জামান, পিপিএম-সেবা মহোদয়।
আমি খুব কাছে থেকে তাঁকে দেখেছি , শতভাগ পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি একজন প্রকৃত মানবিক মানুষ। সদা বিনয়ী, চৌকষ ও ইতিবাচক মনোভাবী। পাশাপাশি তিনি একজন সংস্কৃতিজন, ফটোগ্রাফার, শিল্প, সাহিত্য ও চলচ্চিত্র প্রেমী। এরকম পুলিশ অফিসারে ভরে উঠুক দেশের সকল পুলিশ বিভাগ।