Logo

সারাফ নাওয়ার এর তিনটি কবিতা

অনিন্দ্য বাংলা
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৪, ২০২০
  • শেয়ার করুন

সারাফ নাওয়ার এর তিনটি কবিতা

১. দিশা

বাঁধ ভাঙ্গা চোখের জল মুক্তা হয়ে যায়
দূরের আলোর ছোঁয়ায়
এই আলো কোন ধ্রুপদী মনের
তপ্ত জলও অগ্নি চোখের গভীর জীবনের।
বাইরের পৃথিবী ঘুমিয়ে তখন
আরোপিত নিয়মে।

সময়ের অন্ধকার গহীনে জাগ্রত
ত্যাজ ও অভূতসত্য
গভীর আঁধার খুঁড়ে তখনই
উঠে আসে কালের অমৃত বাণী!

ভরকেন্দ্র চারদিকের বর্তমান
সাড়া দেবে সে সুশীল উত্তরে
রাতের বৃক্ষরা সে-যাবৎ জেগে থাকে
অপেক্ষায়
তারাদের সাথে…

সকাল তার প্রতিফলন
নদী যার প্রবাহ
পর্বতেরও দৃঢ়তা ফিরে পাওয়া
পাখিদেরও মুগ্ধ উড়াউড়ি সহাস্য সমগ্রে…

 

২. তিলোত্তম

মন যায় বিরহের বাড়ি
জানবে বলে তিলের ইতিহাস
ছুটি পায় কবিতার খাতা,মুঠোফোনের পিয়ন
কে কোথায় আছে কার অপেক্ষায়
নেবে না খবর মন তার
বুকের আঁতুড়ঘরে কাঁচাব্যথা–তারও না
রাতের চোখে রাখবে না চোখ।

এ এক নম্র দুখের কৌতূহল
সুপ্ত কোনও পূর্ণিমায় জাগে
যে-পথে নেই প্রাচীর কোনও
এই ভূগোলে প্রেমিক অধিপতি।

যৌনদেবতা–জগৎ-কর্মকার
প্রদক্ষিণরত প্রাজ্ঞদেহে
তিল জানে না সে কোনও পুনরাবৃত্তি
বিপ্লবের অধিকারী!
কালের চক্রে দাঁড়ায় বালিকাতে
ধরা যাক সামনেই আষাঢ়-শ্রাবণ
জলের শাসক তিলবান।

কাব্যগ্রন্থ — দূরের তান্ত্রিক

 

৩. চুক্তিগত সিদ্ধান্ত

জীবন যখন স্বাধীনসমৃদ্ধ ব্যক্তিগত
মনে মনে সে ঘর বাঁধে অবাস্তবের
শাড়ি-গহনা, পাঞ্জাবি ও লালচে ধুতি
অবাস্তবেই যার
প্রেম থাকে, গন্ধ থাকে, গভীর স্পর্শ থাকে।
থাকেই থাকে।

ওটাই যখন ঘর বাঁধে নিরেট বাস্তবে
সবই থাকে বস্তুত,
তখন থেকে মনই শুধু বাইরে থাকে
এখানে-ওখানে, থাকে সবখানে, শুধু ঘর ছাড়া।
থাকেই থাকে।

ভুলের যুগল ফটোগ্রাফেই হাসে- নিঁখুত-নিপুন
ফটোগ্রাফের কি আর প্রাণ থাকে?
আগামী দিনের এটিও একটি প্রমাণিত সত্য-
ভেঙ্গে ভেঙ্গে চলন প্রথা
যথাযথ প্রমাণ হবে-
সিদ্ধান্ত মাত্রই শাসন সুবিধার্থ- উদ্দেশ্যপ্রণোদিত
সিদ্ধান্ত মাত্রই ছিল- সম্পর্কের অপ্রকৃতস্থ।

ভোরের পাখিরা উড়ে যায় ভুলের ঊর্ধ্বে- যতদূর যাবার
ফিরে আসে প্রত্যহ চুক্তিবিহীন সন্ধ্যার প্রণয় ও সংসারে।