Logo

সাহিত্যে এবার নোবেল পেলেন মার্কিন কবি লুইস

অনিন্দ্য বাংলা
বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৮, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক : বাছাইয়ের কাজে নিয়োজিত কমিটিতে কয়েক বছরের বিতর্ক এবং যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনার পর সাহিত্যে চলতি বছরের নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন কবি লুইস গ্লুক। বৃহস্পতিবার সুইডেনের স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় সুইডিশ একাডেমি বিশ্বের সম্মানজনক এ পুরস্কারের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে।

সুইডিশ একাডেমি বলছে, সরল ও সৌন্দর্যময় সুস্পষ্ট কাব্যিক কণ্ঠস্বরের জন্য এ বছর সাহিত্যের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে লুইস গ্লুককে। তার কাব্যিক ঢং স্বতন্ত্র অস্তিত্বকে সার্বজনীন করে তোলে।

সাহিত্যের নোবেলজয়ী এই মার্কিন কবির সর্বাধিক প্রশংসিত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘দ্য উইল্ড আইরিস।’ ১৯৯২ সালে লেখা এই কাব্যগ্রন্থের ‘স্নোড্রপস’ নামের এক কবিতায় শীতের শেষে জীবনের অলৌকিক প্রত্যাবর্তনের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। তার এই কবিতা ব্যাপক সাড়া জাগানো হিসেবে সাহিত্য অঙ্গনে সমাদৃত।

কবি লুইস গ্লুক ১৯৪৩ সালে নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করলেও বেড়ে উঠেছেন ক্যামব্রিজ এবং ম্যাসাচুসেটসে। লেখালেখির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটের নিউ হ্যাভেনের ইয়েল ইউনিভার্সিটির ইংরেজির প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।

সাহিত্যের এই নোবেল জয়ী পুরস্কারের অংশ হিসেবে ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোন পাবেন।

সাহিত্যের নোবেল পুরস্কার জয়ী বাছাই কমিটি সুইডিশ একাডেমিতে যৌন নিপীড়নের ঘটনার পর ২০১৮ সালে সাহিত্যের নোবেল স্থগিত রাখা হয়। সুইডিশ একাডেমির এক সদস্যের যৌন নিপীড়নের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন বেশ কয়েকজন সদস্য।

নোবেল ফাউন্ডেশনের আস্থা ফিরে পেতে কমিটিতে ব্যাপক রদ-বদল আনার পর গত বছর সুইডিশ একাডেমি একসঙ্গে দুই বছরের (২০১৮ এবং ২০১৯ সালের) সাহিত্যের নোবেল জয়ীদের নাম ঘোষণা করে। ২০১৮ সালের সাহিত্যের নোবেলজয়ী হিসেবে পোল্যান্ডের ওলগা তুকারচুক এবং পরের বছরের বিজয়ী অস্ট্রিয়ার পিটার হ্যান্ডকে-কে বেছে নেয় সুইডিশ একাডেমি।

নোবেলজয়ী হিসেবে হ্যান্ডকের নাম ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে সাহিত্য অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়। কারণ নব্বই দশকের বলকান যুদ্ধে সার্বিয়ার গণহত্যার কট্টর সমর্থক হ্যান্ডকে। পরবর্তীতে সার্বিয়ার মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য তাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

হ্যান্ডকের নোবেল জয়ের প্রতিবাদে আলবেনিয়া, বসনিয়া এবং তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি দেশ নোবেল পুরস্কার অনুষ্ঠান বয়কট করে। এমনকি সাহিত্যের নোবেলজয়ী বাছাই কমিটি সুইডিশ একাডেমি থেকেও একজন সদস্য পদত্যাগ করেন।

ডিএনএ সম্পাদনায় নতুন একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ফ্রান্সের ইমানুয়েল শরপেনটির ও যুক্তরাষ্ট্রের জেনিফার এ দোনা। বুধবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ওই তিন রসায়নবিদের নাম ঘোষণা করে।

মহাবিশ্বের অন্যতম বিস্ময় কৃষ্ণ গহ্বর সম্পর্কে নতুন আবিষ্কারের গবেষণায় ২০২০ সালে পদার্থে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানী রজার পেনরোস, মার্কিন জ্যোতির্বিদ রেইনহার্ড গেঞ্জেল ও জার্মান পদার্থবিদ আন্দ্রিয়া ঘেজতিন বিজ্ঞানী। গত মঙ্গলবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি এ বছরের পদার্থে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।

গত সোমবার হেপাটাইটিস সি ভাইরাস আবিষ্কার এবং এর চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য মার্কিন বিজ্ঞানী হার্ভে জে আল্টার ও চার্লস এম রাইস এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল হাউটন দুই মার্কিন বিজ্ঞানীকে চিকিৎসায় নোবেল জয়ী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।

নতুন নতুন উদ্ভাবন, গবেষণা এবং মানব জাতির কল্যাণে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রত্যেক বছর নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। সুইডিশ ব্যবসায়ী ও ডিনামাইট আবিষ্কারক আলফ্রেড নোবেলের ইচ্ছা অনুযায়ী ১৯০১ সাল থেকে বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শান্তি, চিকিৎসা, রসায়নবিদ্যা, পদার্থবিদ্যার নোবেল পুরস্কার দিয়ে আসা হচ্ছে। পরে ১৯৬৯ সালে অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেয়া শুরু হয়।

শুক্রবার (৯ অক্টোবর) নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শান্তিতে এবং সোমবার (১২ অক্টোবর) দ্য রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করবে।

নেট থেকে…