Logo

হাতিয়ায় ১৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী

অনিন্দ্য বাংলা
রবিবার, জুলাই ৫, ২০২০
  • শেয়ার করুন

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক: নোয়াখালীর বিচ্ছন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। গত ৪ দিন যাবৎ উপজেলার মেঘনা নদীর কোল ঘেষা চর ঈশ্বর, সুখ চর, নলচিরা ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নে ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দিয়ে আকস্মিকভাবে জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় ১৫ গ্রামের ১০ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে এসব এলাকার মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উঁচু হয়ে আসা জোয়ারের পানি গত শুক্রবার রাত থেকে তার ইউনিয়নে প্রবেশ করতে থাকে । এতে মাকসুদিয়া গ্রাম, আব্দুল গফুর গ্রাম, মৌলুভীর গ্রাম, চান্দালি গ্রাম, মুলদি গ্রাম, কাদির সরদারের গ্রাম ও কাহারপাড়া গ্রামে বন্যা দেখা দেয়। এতে ওই সব গ্রামের লোকজন গত ৪ দিন যাবৎ বন্যার পানিতে বন্দী হয়ে মানবতর জীবন যাপন করছেন।

চেয়ারম্যান বলেন, এই ইউনিয়নে ঘূর্নিঝড় আম্পানের প্রভাবে আধা কিলো মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় পানি প্রবেশ করেছে। এতে ফসল নষ্ট হয়েছে। খামারের মাছ ভেসে গেছে।

উপজেলার চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাশেদ উদ্দিন জানান, গত ৪ দিন যাবৎ তার ইউনিয়নে বেড়ি বাঁধ বিহিন এলাকা দিয়ে ১,২,৩ ও ৪ নং ওয়ার্ডে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে। এতে ওই ইউনিয়নের তালুকদার গ্রাম, ফরাজিগ্রাম, বাদশা মিয়া হাজি গ্রাম, পন্ডিত গ্রাম, জেলে কলনি পাড়া, মৌলভী গ্রাম ও পঞ্চায়েত গ্রামে বন্যা দেখা দেয়। তিনি আরও জানান, বন্যার পানিতে ১ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

চেয়ারম্যান বলেন, কয়েক বছর আগে প্রবল জোয়ারের স্রোতে ও ঘূর্নিঝড়ে এই ইউনিয়নে সাড়ে ৩ কিলো মিটার বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ভাঙ্গা বেড়ি বাঁধ পুন: নির্মান না করায় খুব সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ফসল ও খামারের মাছ ভেসে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

নলচিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ন কবির বাবলু জানান, তার ইউনিয়নে ১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ দীর্ঘ দিন যাবৎ ভাঙ্গা রয়েছে। বেড়ি বাঁধের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বাড়ি ঘর, ফসলের মাঠ ও মৎস খামার প্লাবিত হচ্ছে।

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেরাজ উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়নে ৩ টি ওয়ার্ডে বন্যা দেখা দিয়েছে। এসন এলাকার ফসল ও মাছের খামার জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।

নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন বলেন, মেঘনার পানি বাড়ার কারণে প্রতিদিনই হাতিয়া উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ বাড়ি ঘর ও ফসলের মাঠ প্লাবিত হচ্ছে। এতে করে বসত ঘর ফসল ও মৎস খামারের ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নে দেড় কিলো মিটার এবং নল চিরা ও চর ঈশ্বর ইউনিয়নে ৬ কিলো মিটার বেড়িবাঁধ নেই। এগুলো মেরামতের জন্য গত অর্থবছরে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে চিঠি লেখা হয়েছে। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় এ ভাঙ্গা বাঁধ গুলো মেরামত করা সম্ভব হয় নি।

তিনি জানান, হাতিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়ি বাঁধ নির্মাণ, নদী তীরবর্তী এলাকা ভাঙ্গন রোধে ২ হাজার ১৩২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্প পাশ হলেই কাজ শুরু হবে।