অন্যান্য খবর আইন-আদালত

জুন-জুলাইয়ে নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার ৪৩৮ জন, ধর্ষণের শিকার ৫১

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২-৮-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১২

দেশে নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। চলতি বছরের জুন ও জুলাই মাসে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মোট ৪৩৮ জন নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫১ জন। এ ছাড়া হত্যাসহ নানা সহিংসতার চিত্র উঠে এসেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনবিষয়ক মাসিক প্রতিবেদনে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) প্রকাশিত জুলাই মাসের প্রতিবেদনটি মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। প্রতিবেদনটি মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদ কর্তৃক জাতীয় ১৫টি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুধু জুলাই মাসেই ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৫১ জন নারী ও কন্যা। এর মধ্যে ৩২ জন কন্যা এবং ১৯ জন নারী। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১১ জন—যার মধ্যে ৪ জন কন্যা ও ৭ জন নারী। ধর্ষণের পর ১ জন কন্যাকে হত্যা করা হয়েছে, এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে আরও ১০ জনকে (৮ কন্যা ও ২ নারী)।

এছাড়া যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৯ জন কন্যা ও ৬ জন নারী। এসিড ও অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছেন ৭ জন নারী। তাদের মধ্যে ৩ জন এসিডে দগ্ধ এবং ১ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আত্মহত্যা করেছেন ১৭ জন (৩ জন কন্যা ও ১৪ জন নারী), যাদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর পেছনে সহিংসতা ও পারিবারিক নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩ জন নারী।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শুধু জুলাই মাসেই ৭৮ জন নারী ও কন্যাশিশু হত্যা ও রহস্যজনক মৃত্যুর শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১০ জন কন্যা ও ৫৬ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে ১ জন নারীর ওপর। ৫ জন কন্যা ও ৬ জন নারীর মৃত্যু ‘রহস্যজনক’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৬ জন (২ কন্যা ও ৪ নারী)। গৃহকর্মী নির্যাতনের কারণে আত্মহত্যা করেছেন ৩ জন (২ কন্যা ও ১ নারী)। অপহরণের শিকার হয়েছেন ১০ জন (৮ কন্যা ও ২ নারী), এবং ১০ জন নারী পাচার হয়েছেন। বাল্যবিয়ের চেষ্টা হয়েছে ২ জন কন্যার ওপর। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩ জন নারী, এবং ৬ জন নারী অন্যান্য বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ তাদের বিবৃতিতে এ ভয়াবহ চিত্রের প্রতি রাষ্ট্র ও সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত কার্যকর আইনি ও সামাজিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।