নিয়ন্ত্রণ রেখা ঘিরে টানা সংঘর্ষ ও পাল্টা হামলার পর যুদ্ধ পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, তখন তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (১১ মে) 'ধন্যবাদ জ্ঞাপন দিবস' পালন করছে পাকিস্তান। এ দিবসটি দেশটির সামরিক সাফল্য উদযাপন, জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অংশ হিসেবে পালন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, উর্দু ভাষায় এই দিবসটি ‘ইয়ুম-এ-তাশাকুর’ নামে পালিত হচ্ছে। দিনটি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় এবং সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেন, “আজকের দিনটি আমরা আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে উদযাপন করছি। আমাদের সামরিক বাহিনী 'অপারেশন বুনিয়ান মার্সাস'-এর মাধ্যমে শত্রুর আগ্রাসনের মুখে সাহসিকতার ইতিহাস রচনা করেছে।” তিনি যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে সহায়তাকারী আন্তর্জাতিক বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান।

যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে একদিন আগেই, শনিবার (১০ মে)। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ ও মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হন। ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ এক পোস্টে লেখেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ রাতব্যাপী আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তান একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। আমি উভয় দেশকে অভিনন্দন জানাই।”

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার এক বিবৃতিতে জানান, দিনভর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চলেছে, যার ফলশ্রুতিতে এ যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, “উভয় দেশ আজ গুলিবর্ষণ ও সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে একটি কার্যকর সমঝোতায় পৌঁছেছে।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই যুদ্ধবিরতি উপমহাদেশে একটি বড় ধরনের সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা আপাতত ঠেকিয়ে দিয়েছে। তবে স্থায়ী শান্তির জন্য ভবিষ্যতেও পারস্পরিক আস্থা ও আন্তর্জাতিক সহায়তার ভূমিকা অপরিহার্য হয়ে থাকবে।