সকল খবর ভূমি বিষয়ক খবর

ভূমি সেবায় বড় সিদ্ধান্ত: খতিয়ান সংশোধন ও ওয়ারিশানদের যৌথ নামজারি বাধ্যতামূলক

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ২-৬-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৩৫

ভূমি মালিকদের দ্রুত, কার্যকর ও হয়রানিমুক্ত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে ভূমি মন্ত্রণালয় দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে দেশের সকল সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ডদের ইতোমধ্যেই কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সংশোধিত নিয়ম অনুযায়ী, খতিয়ানে করণিক ভুল সংশোধন সহজ হয়েছে এবং নামজারির ক্ষেত্রে এখন থেকে ওয়ারিশদের যৌথ খতিয়ান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সরকার মনে করছে, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ মানুষ একদিকে যেমন দুর্নীতি ও জটিলতা থেকে মুক্তি পাবে, অন্যদিকে ভূমি ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও দৃঢ় হবে।

প্রথম সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, খতিয়ানে নাম, দাগ নম্বর, জমির পরিমাণসহ ১২-১৩টি নির্ধারিত বিষয়ের করণিক (পষবৎরপধষ) ভুল এখন থেকে সরাসরি ভূমি অফিসে আবেদন করেই সংশোধন করা যাবে। এজন্য আর আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে না। ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার হয়রানি থেকেও রেহাই পাবে। সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় দলিল, সঠিক নামের প্রমাণপত্র, ওয়ারিশান সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেই সংশ্লিষ্ট ভুলগুলো সংশোধনের সুযোগ থাকবে।

তবে ভূমি অফিস যদি অযৌক্তিকভাবে সংশোধনের আবেদন বাতিল করে বা কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

দ্বিতীয় সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, নামজারির ক্ষেত্রে এক বা একাধিক ওয়ারিশ যদি সম্পত্তি ভাগ করে বাটোয়ারা দলিল সম্পাদন না করেন, তাহলে সকল ওয়ারিশকে একসঙ্গে যৌথভাবে নামজারির জন্য আবেদন করতে হবে। অর্থাৎ, এককভাবে কারও নামে খতিয়ান তৈরি করা যাবে না। সঠিক ওয়ারিশান সনদ থাকা বাধ্যতামূলক এবং কোনো ওয়ারিশ বাদ পড়লে তা বাতিলযোগ্য হবে।

যৌথ খতিয়ানে শুধুমাত্র কে কত অংশ পাবেন তা উল্লেখ থাকবে, কে কোন অংশ ভোগ করবেন — তা নির্ধারণ করা হবে না। একক মালিকানা দাবি করতে হলে অবশ্যই বাটোয়ারা দলিল রেজিস্ট্রি করে জমা দিতে হবে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের জারি করা নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে-
১. যদি আবেদনকারীর কাগজপত্র অপ্রতুল হয়, ভূমি অফিস তাৎক্ষণিকভাবে আবেদন বাতিল করতে পারবে না। বরং সময় দিয়ে কাগজপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।
২. কেবলমাত্র কোনো আবেদন মিথ্যা বা জাল প্রমাণিত হলে তবেই তা বাতিল করা যাবে।

ভূমি বিশেষজ্ঞ ও অধিকারকর্মীরা বলছেন, এই সিদ্ধান্তগুলোর ফলে ভূমি মালিকদের হয়রানি ও দুর্নীতি অনেকটাই কমবে। তারা সহজে খতিয়ান সংশোধন করতে পারবেন, নামজারি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও সমতা বজায় থাকবে এবং সর্বোপরি ভূমি সেবায় মানুষের আস্থা বাড়বে।

ভূমি মালিকদের যথাযথ দলিল, ওয়ারিশান সনদ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।