সকল খবর দেশের খবর

এসএসএফকে পেশাদারিত্ব বজায় রেখে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক, অনিন্দ্যবাংলা

প্রকাশ : ১৮-৬-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০১২

বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) যেন সব ধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে—এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৮ জুন) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এসএসএফ-এর ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এসএসএফ একটি ছোট আকারের বাহিনী হলেও এর দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল। আমার নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই বাহিনী আমার এবং রাষ্ট্রপতির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। গত ১০ মাসে দেশ ও বিদেশে এসএসএফ যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট।”

তিনি জানান, তার সরকারি বাসভবন, কার্যালয়, গমনাগমন এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে এসএসএফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সম্প্রতি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে এসএসএফ সাফল্যের সঙ্গে কাজ করেছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তির কারণে নিরাপত্তা হুমকির ধরন দ্রুত পাল্টাচ্ছে। এর মধ্যে শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হলেও এসএসএফ তা দক্ষতার সঙ্গে করে যাচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করাও সময়ের দাবি। এসএসএফ ইতোমধ্যে যমুনার সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং কার্যালয়ের সাইবার নিরাপত্তা উন্নয়নেও কাজ করবে বলে আশা করছি।”

তিনি জানান, খুব শিগগিরই বাহিনীর ১২ বছর পুরনো 'ভিএইচএফ রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম' বাতিল করে সর্বাধুনিক 'ইউএইচএফ রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম' চালু করা হবে। এতে অপারেশনাল সক্ষমতা বহুগুণে বাড়বে।

বাহিনীর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও সরঞ্জামাদির আধুনিকায়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত ৫ আগস্ট এসএসএফ-এর কিছু সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় সচল করা হয়েছে। বাহিনীর আধুনিক ইনডোর ফায়ারিং রেঞ্জও আগামী মাসে চালু হচ্ছে।”

জনসাধারণের ভোগান্তি হ্রাসে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অতীতে ভিআইপি ফ্লাইটের কারণে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় এক ঘণ্টা ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ থাকত, যা সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়াত। আমি এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছি।”

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এসএসএফ ভবিষ্যতেও সেনা, নৌ, বিমান, পুলিশ ও আনসার বাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে পেশাদারিত্ব বজায় রাখবে।

সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি চারিত্রিক দৃঢ়তা, শৃঙ্খলা, সততা ও মানবিক গুণাবলি বজায় রেখে কাজ করতে হবে। রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রেখেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে এসএসএফ-এর বড় চ্যালেঞ্জ ও গৌরব।”

অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা এসএসএফ-এর মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাহিনীর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।