সকল খবর ময়মনসিংহের খবর

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল সভাপতি হতে মরিয়া সন্তানের জনক মহিউদ্দিন এবং সাধারন সম্পাদক হতে তোড়জোড় জামাত নেতার ভাই হাবিবের

অনিন্দ্যবাংলা ডেস্ক:

প্রকাশ : ১৬-৬-২০২৫ ইং | নিউজটি দেখেছেনঃ ৫০৮১

করেছেন বিয়ে, রয়েছে চার বছর বয়সী এক সন্তান, মাস্টার্স শেষ হয়েছে আরও কয়েক বছর আগে তবুও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন মো. মহিউদ্দিন। ইতিমধ্যে জোর লবিংসহ ভাইভায় অংশ নিয়েছেন তিনি। মহিউদ্দিনের মত বিতর্কিত আরও অনেকে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হতে চালাচ্ছেন তৎপরতা। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে-বাহিরে নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২১ সালের ৬ জুন ইমরান হোসেন প্রধানকে আহ্বায়ক এবং আল আমিনকে সদস্য সচিব করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের ২৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। গত ২১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কর্মীসভা এবং ২২ মে ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে কর্মীসভা এবং ভাইভায় অংশগ্রহণ করেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক মো. মহিউদ্দিন, মো. ইমরান হোসেন ফরাজী এবং মারুফ হাসান (মামুন সরকার) প্রমূখ। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন হাবিবুর রহমান (হাবিব), তোফায়েল ইসলাম এবং শাকিল আহমেদ প্রমূখ।

অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হতে কর্মীসভা এবং ভাইভায় অংশ নেয়া অধিকাংশ প্রার্থী অছাত্রসহ নানা বিতর্কিত কর্মকা-ে জড়িত। যা ছাত্রদলের পদ পেতে গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। তবে বিতর্কিতদের দৌঁড়ঝাপে এক প্রকার কোণঠাসা ত্যাগীরা। সাধারণ ছাত্রদের দাবি গঠণতন্ত্র অনুয়ায়ী কমিটির মাধ্যমে উঠে আসুক নেতৃত্ব।

সভাপতি পদপ্রার্থী ২০১৩-১৪ সেশনের চারুকলা বিভাগের মো. মহিউদ্দিন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে সিজিপিএ ৩.২০ পেয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তার ছাত্রত্ব নেই। করেছেন তিনি বিয়েও। কাবিন নামার তথ্যমতে ২০২২ সালের ৩০শে আগস্ট মোছা. নাসরিন আক্তারের সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। টিকা কাডের তথ্যমতে ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল মাহির স্বাদকিন জায়ান নামে তাঁর পুত্র সন্তানের জন্ম। মহিউদ্দিনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধরসহ চাঁদাবাজীর অভিযোগ রয়েছে।

সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান হাবিব নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সহ সভাপতি মো. উবায়দুল্লাহর আপন চাচা। তার আপন বড় ভাই মোঃ শরীফুর রহমান (শরীফ) আওয়ামী নেতা এবং তার আপন চাচাতো ভাই মাওলানা মোঃ কামরুজ্জামান শাকিল জামায়াতে ইসলামী,ত্রিশাল উপজেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি। ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে পূনর্বাসনের অভিযোগ রয়েছে। ত্রিশালে জামায়াতের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত রাহেলা হযরত মডেল স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সে চাকরিরত।

সভাপতি প্রার্থী মারুফ হাসান মামুন সরকার বলেন, মহিউদ্দিন বিবাহিত এবং তাঁর এক সন্তান রয়েছে আপনার মত আমিও জানি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই তা জানে। এমনকি আমাদের কমিটি গঠনের টিম লিডারও সে বিষয়ে অবগত। সকল প্রার্থীর অবস্থান সম্পর্কে সকলেই জানে। আমার দাবি হল স্বচ্ছ এবং চলতি শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কমিটি করে ছাত্র রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হক।

সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী তোফায়েল ইসলাম বলেন, ৫ আগষ্ট পূর্ববর্তী সময়ে যারা ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিল এবং দেশ, দল তথা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানের প্রশ্নে আপোষহীন তারাই আগামীর নেতৃত্বে আসুক। সকলের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই বাছাই করে কমিটি হলে এর সুফল পাবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

 সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, বিগত কমিটিতে যুগ্ম-আহবায়কের দায়িত্বপালন করেছি। আমাকে সাধারণ সম্পাদক করা হলে সংগঠনের জন্য ভালো কিছু হবে। তবে আমি কাউকে পুনর্বাসন করিনি। এগুলো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার।

 সভাপতি পদপ্রার্থী মো.মহিউদ্দিন বলেন, আমি বিয়ে করিনি তাহলে সন্তান হবে কেমনে। কাবিন নামা এবং টিকা কাড ভূয়া বানিয়ে আমার প্রতিপক্ষরা অপপ্রচার করছে। দুইটার তারিখ মিলিয়ে দেখলে আপনারা বুঝবেন সেটা ভূয়া। আর ছাত্রত্বের বিষয়টি সেটা পরে দেখা যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল শাখার নতুন কমিটি গঠনের টিম লিডার ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শাকির আহমেদ বলেন, ছাত্রত্ব নেই বিবাহিত এমন অভিযোগ পেয়েছি। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে প্রত্যেকের অভিযোগ আসছে প্রতিনিয়ত। এগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। দলের স্বার্থেই কমিটিতে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।